পাতা:আমার জীবন.djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন ఆమె কারণ কিছুই জানি না । হায় ! একি ভেল্কীবাজী না কি, না আমি স্বপ্ন দেখিতেছি ; এই প্রকার আমার মনের ভাব হইল, বাস্তবিক আপনার শরীর নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলে পরমেশ্বরের প্রতি বিলক্ষণ প্রতীতি জন্মে, তাহাকে আর দূরে অন্বেষণের আবশ্বক হয় না। সহজ চক্ষে স্পষ্টকপে বেশ দেখা যাইতেছে । আমাদের সেই দয়াময়, দয়ার সাগর পরম পিতা আমাদিগকে সকল দিয়াছেন বলিয়া তিনি কি দূরে রহিয়াছেন, এমন নহে, সঙ্গে সঙ্গে আছেন । যখন ঐ সংসার সমুদ্রের তরঙ্গে আমার এই শরীরতরণীর বাইচ হইয়াছিল, তখন সেই বিপদভঞ্জন আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকিয়া, ভয় নাই, ভয় নাই, বলিয়া সাহস প্রদান করিতেন । এমন কি, আমি যখন যে কাজ করিতাম, আমার নিশ্চয় জ্ঞান হইত, যেন পরমেশ্বর আমার সঙ্গে সঙ্গেই আছেন। যখন আমি ১৮ বৎসর হইলাম, তখন আমার প্রথম সন্তানটি হয়, ক্রমে ক্রমে আমার বারটি সন্তান হয় । এই ১৮ বৎসর বয়স হইতে আর পঞ্চাশ বৎসর বয়স পর্যস্ত আমার শরীরের অবস্থা, মনের ভাব প্রায় এক মতই ছিল । সংসারের কাজকর্মে ও ছেলেদের লালন-পালনে মনে ভারি মত্তত -থাকিত । অনন্তর আমি ক্রমে প্রাচীন দলে পড়িলাম বটে, কিন্তু তখন পর্বস্ত সংসারের প্রতি মনের ভাবের কোন বৈলক্ষণ হয় নাই । পরে এ দিকে আর কয়েক বৎসর আমি যদিও সম্পূর্ণ সংসারী ছিলাম, তথাপি পূর্বোপেক্ষ আমার মনে বিলক্ষণ ঔদাস্ত ভাবের উদয় হইতে লাগিল । তখন শরীরের অবস্থাও ক্রমে লম্বমান হইতে লাগিল । এই অবস্থায় সাতায় আটান্ন বৎসর প্রায় গত হইয়া গিয়াছে। তখন আমার তিনটি পুত্রের বিবাহ হইয়াছে, তিনটি পুত্রবধুও হইয়াছে। ছোট কস্তাটির একটি পুত্র হইয়াছে, তখন আমি পতি, পুত্র, পুত্রবধু কস্তা এবং বাটীর লোকজন ও প্রতিবাসিনীগণ এই সকলকে লইয়া মহা আছাদিত হইয়া প্রফুল্পচিত্তে কালযাপন করিয়াছি । কিন্তু পরমেশ্বর । তোমার ভঙ্গী বুঝা যায় না, তুমি সকলি করিতে পার।