পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

একটা ছ’তালা বাড়ী, সমবায় সমিতির বিপণী। দূরে দূরে বড় বড় বাড়ীর ধ্বংসস্তূপ, আর তার পাশেই উঠ্‌ছে নূতন সৌধমালা। মহাসর্বনাশের বুকে নবসৃষ্টি রূপায়িত হয়ে উঠছে। প্রলয় ও সৃষ্টির মহারহস্য রৌদ্রতপ্ত নগরীর বুকে এক বিভ্রান্তিকর মরিচীকার মত মনে হ’ল। প্রণাম করে বললাম, স্তালিনগ্রাদ তুমি আজ মস্কৌ বা লেনিনগ্রাদের মত রূপসী নও, তুমি বীর্যবতী। নাৎসী-দানব দলনে তোমার ভীমা ভৈরবী মূর্তি আজ সংযত। লক্ষ নরমুণ্ডের ওপর তুমি কমলামূর্তিতে নবসৃষ্টির সাধনায় বসেছ মহিয়সী রাণীর মত।

 ১৯১৮ সালের কথা। জারের আমলে জারিৎসিন নামে খ্যাত নগরী, বিদেশী সাহায্যপুষ্ট প্রতিবিপ্লবী সেনাপতিদের দ্বারা অবরুদ্ধ। অবস্থা সঙ্গীন। লাল পল্টনের ব্যূহ বিচ্ছিন্ন। উত্তর ককেশিয়া থেকে মস্কৌএ গম পাঠাবার পথ প্রতিবিপ্লবী কশাক সৈন্য অধিকার করেছে, এমন সঙ্কটের দিনে লেনিনের নির্দেশে স্তালিন জারিৎসিন অবরোধ মুক্ত করবার ভার গ্রহণ করলেন। রাজনীতিক বিপ্লবী নেতা স্তালিন সামরিক নেতৃত্বেও তাঁর প্রতিভা ও কর্মশক্তির পরিচয় দিলেন। জারিৎসিন বন্দর অবরোধ মুক্ত হল; তাঁর উৎসাহে অনুপ্রাণিত লালপল্টন জেনারেল ক্রাসনফের সৈন্যদলকে ছত্রভঙ্গ করে দিল। এই বিপুল সাফল্যের স্মৃতিরক্ষায় সোবিয়েত গভর্নমেণ্ট বন্দরের নূতন নাম দিলেন স্তালিনগ্রাদ।

 দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে নাৎসী বাহিনী পরিবেষ্টিত স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধের ইতিহাস অনেকেরই জানা। ১৯৪১এর সেপ্টেম্বর মাসে

৯৩