পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

সুস্পষ্ট। পরাধীনতা এবং তার ফলে দারিদ্র্য অশিক্ষা কুসংস্কার এবং সামন্তযুগের দাসত্বের পাঁক থেকে এরা মাত্র পঁচিশ বছর হলো উদ্ধার পেয়েছে, এবং আজ এদের দেহে মনে পুরাতন গরিবী ও ভীরুতার কোন ছাপ নেই।

 সর্বত্র যেমন এখানেও তেমনি শিশুপালনাগার কিণ্ডারগার্টেন হাসপাতাল সংস্কৃতিভবন সুনিয়ন্ত্রিত ও সুপরিচালিত। জর্জিয়ার লোক সংখ্যা ৩৩ লক্ষের মত, অথচ এদের বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রাবাস আকারে আয়তনে সাজসজ্জায় ভারতের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় অপেক্ষা বড়। জর্জিয়ার শিক্ষামন্ত্রী বললেন, এঁদের রাজস্বের অর্ধেক শিক্ষার জন্য ব্যয় হয়। আমাদের বৃহৎ কারখানার আয় থেকে স্বাস্থ্য ও লোকহিতকর কাজ করা হয়, কাজেই শিক্ষার জন্য এত অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশের ব্যয় রাজস্বের শতকরা সাত ভাগ মাত্র!

 প্রথমরাত্রে যে পাহাড়ের চূড়ায় প্রমোদভবনে আমরা মোটরে গিয়েছিলাম, সেই পাহাড়ে স্বতন্ত্র পথ দিয়ে ইলেকট্রিক রেলে (Finicular Railway) ওঠা গেল। সোজা খাড়া ওপরে উঠে যায়, গা শির শির করে। ট্রেন থেকে নেমে ডান দিকে অগ্রসর হলাম। ষষ্ঠ শতাব্দীর পুরাতন গীর্জা। অনেক মূর্তি ও দেয়ালচিত্র আছে। এর প্রাঙ্গণে কবি ও লেখকদের সমাধি। এক পাশে আচ্ছাদনহীন কৃষ্ণমর্মর পাথরে রচিত স্তালিন জননীর সমাধি। ইনি অত্যন্ত সাদাসিধে ভাবে তিবলিসিতেই বাস করতেন। ১৯৩৭ সালে অতি বৃদ্ধা হয়ে ইনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১১৭