পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

 এই তিবলিসি সহরেই খৃস্টান পাদ্রীদের বিদ্যালয়ের ছাত্র স্তালিন মার্কসবাদে দীক্ষা লাভ করেন। শ্রমিকদের বৈপ্লবিক সংস্থা গঠন করবার ভার নিয়ে তিনি ১৮৯৪ থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত শ্রমিকদের মধ্যে কাটিয়েছেন, জেলে গিয়েছেন, জেল থেকে পালিয়ে পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে বলশেভিক মতবাদ প্রচার করেছেন। ১৯০৩ সালে জেল থেকে পালিয়ে এসে স্তালিন এক গুপ্ত ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকে নিষিদ্ধ পুস্তক, সাময়িক পত্র, ইস্তাহার প্রভৃতি প্রকাশ করা হ’ত। পুলিশ দু’বছর পাগলের মত ছাপাখানাটি খুঁজেছে। রাশিয়ান জর্জিয়ান আর্মেনিয়ান আজার বাইজান নানা ভাষায় এখান থেকে বই, সাময়িক পত্র প্রকাশিত হ’ত। আমরা এই গুপ্ত ছাপাখানাটি দেখলাম। একটি সত্তর ফুট গভীর কূপের মাঝামাঝি সুরঙ্গ কেটে বাড়ীর তলায় গর্ভগৃহ রচনা করা হয়েছিল। দড়ীর পুলী মৈ-এর সাহায্যে কর্মীরা যাতায়াত করতেন। হাতে চালানো ছাপাখানা এবং বিভিন্ন ভাষার হরপ ছিল। ১৯০৬ সালের ১৫ই এপ্রিল জারের পুলিশ ছাপাখানা আবিষ্কার করে। এ বাড়ীটা এখন ম্যুজিয়ম।

 তিবলিসি সহর যন্ত্রশিল্পের এক প্রধান কেন্দ্র। আমরা একটা সূতো ও মোজা গেঞ্জীর কারখানা দেখলাম। দেখলাম শ্রমিকদের আবাস বিশ্রাম ভবন শিশুপালনাগার। সমস্ত দিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, একটা বৃহৎ বাগানে গেলাম বিশ্রাম করতে। বেলা পড়ে এসেছে, দলে দলে নরনারী আসছে, সঙ্গে ছেলেমেয়েরা। নানাস্থানে ছেলেদের খেলার জায়গা, কোথাও নাচগান হচ্ছে।

১১৮