পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

এ থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমাদের একমাত্র অপরাধ আমরা মস্কৌ থেকে আমন্ত্রিত হয়েছি। এটা তাঁরা অস্বীকার করবেন, কিন্তু আমাদের ভারতের বাইরে যাওয়াটা অবাঞ্ছনীয় কেন, তার কোন যুক্তিসঙ্গত হেতু তাঁরা নির্দেশ করবেন না। আমরা দাবী করছি, শিষ্টাচারের খাতিরেও তাঁরা আমাদের ও জনসাধারণের নিকট একটা কৈফিয়ৎ দিন। কেন না, এর সঙ্গে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন জড়িত।”

 ১১ই জুন নয়াদিল্লীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কৈফিয়ৎটা দিলেন স্বয়ং প্রধান মন্ত্রী জওহরলাল। তিনি বললেন, ৩৯ জন নিমন্ত্রিতের মধ্যে ৩০ জনকেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিদেশে যেতে কাউকে বাধা দেবার প্রশ্ন ওঠে না। যে-কয়জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি, তার কারণ তাঁরা রাশিয়া যেতে চাচ্ছেন বলে নয়। নিয়ম মত এ ব্যাপারে প্রাদেশিক গভর্নমেণ্টগুলিরও বক্তব্য আছে এবং তাঁরা ঐসকল ব্যক্তির “অতীত কার্যকলাপ” বিবেচনা করে অসম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। আমি ত্রিশ বৎসর বাঙ্গলা দেশে সাংবাদিকতা করছি। স্বাধীনতা লাভের পরও আমার “অতীত কার্যকলাপ” রাজ্য-সরকারের নিকট দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে আছে জেনে বিস্মিত ও ক্রুদ্ধ হলাম। ছাড়পত্র না পাই, কিন্তু এই অপবাদ নিঃশব্দে পরিপাক করা কঠিন। নয়াদিল্লীর বৈদেশিক দপ্তরে কথাটা জানালাম। তারের উত্তরে জবাব এলো ছাড়পত্র মঞ্জুর হয়েছে। ১৫ই জুন বিকালে ছাড়পত্র নিয়ে সেই দিন রাত্রেই দিল্লী যাত্রা করলাম। ‘খাদি-যবনিকা’ উত্তোলিত হ’ল।