পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

জ্যোতির্বিজ্ঞানী উলুক বেগ, কবি আলী শের নাভাই-এর খ্যাতি একদিন সমগ্র প্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।

 সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ যে ভাবে সমগ্র প্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তার করেছিল, ঠিক সেই ভাবেই সাহসী রণনিপুণ পরিশ্রমী শিল্প ও চারুকলায় উন্নত উজবেকদের জাতীয় জীবনের ওপর অন্ধকার নেমে এলো। জার সাম্রাজ্যবাদ কবলিত উজবেকজাতি মোল্লাতন্ত্র ও জারতন্ত্রের শোষণ শাসনে দরিদ্র কৃষক মজুর ও যাযাবরে পরিণত হ’ল। অক্টোবর বিপ্লব ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিল। ১৯২৪-২৫ থেকে এক নূতন অভ্যূত্থান। সেদিন এরা আমাদের দেশের চেয়েও পিছিয়ে ছিল, শতকরা ৯৮ জন ছিল নিরক্ষর। রুক্ষ্ম মরুভূমির কৃপণ মাটিতে মাথা খুঁড়ে যা পেত তার অধিকাংশই সেখ ও বেগের (অভিজাত) দল নানা ছলে কেড়ে নিত। কিন্তু এক জায়গায় ওদের সঙ্গে আমাদের মিল ছিল। সে হ’ল ধর্ম সম্প্রদায় নিয়ে কলহ। জারের আমলে ওরা আমাদের মতই ধর্ম ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মাথা ফাটাফাটি করতো। সাম্রাজ্যরক্ষার এই ভেদনীতির বিষাক্ত শিকড় আত্মসম্বিতহীন সমাজকে টুক্‌রো টুক্‌রো করেও একত্র বেঁধে রাখে, যেমন বট অশ্বত্থের শিকড় পুরাতন পরিত্যক্ত মন্দিরের শ্রীহীন বিকৃত ঠাটকে আঁকড়ে ধরে থাকে।

 এর দুঃখ ও অপমান আমরা জানি। এই ভেদনীতির আর একরূপ ‘ল’ এণ্ড ওর্ডার’ অর্থাৎ শান্তি ও শৃঙ্খলা! ইংরাজ শাসকেরা জাঁক করে বলতেন, কেবল কি হিন্দু মুসলমান

১৪৬