আমার দেখা রাশিয়া
আতিথেয়তার অজস্রতা, ঘরে তৈরী ছয় সাত রকম সুমিষ্ট সুরা। এমন সময় গ্রামের যুবক যুবতীরা এসে নৃত্যগীত জুড়ে দিলেন। ভোজ সমাপ্ত হ’লে কৃষিক্ষেত্রের অধ্যক্ষ আমাদের উজবেক পোষাক উপহার দিলেন। আমাদের উজবেকী পোষাক পরিয়ে যুবতীরা নাচবার জন্য সাধাসাধি শুরু করলো। শেষ পর্যন্ত লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে এক প্রকার ভালুক নাচ নেচে অব্যাহতি পাই।
বেলা গড়িয়ে এসেছে, আমরা তুলোর ক্ষেত, ট্রাক্টর ও কৃষিযন্ত্রপাতির ঘর, অশ্বশালা ও গোশালা দেখে অধ্যক্ষের বাড়ীতে গেলাম। আবার ভোজসভা বস্লো। তিনি পুরনো দিনের এবং কৃষিক্ষেত্রের ক্রমোন্নতির ইতিহাস শোনালেন। এঁর বয়স ষাটের কোঠা পেরিয়ে গেছে; দীর্ঘ সমুন্নত বলিষ্ট দেহ কর্মী পুরুষ। বল্তে লাগলেন, আমি আর দশজনের মতই ছিলাম ভূমিদাস। আমাদের এই গ্রামে ছিল আশী নব্বুই ঘর চাষী, দু’জন জোতদারের ছিল জমি, আমরা ছিলাম ভাগচাষী বা ভূমিদাস। প্রথম মহাযুদ্ধে জারের সৈন্যদলে ভর্তি হয়ে গ্রাম ছাড়লাম, আকর্ষণেরই বা ছিল কি! বলশেভিক বিপ্লবের বার্তা নিয়ে আমরা পাঁচবন্ধু “পার্টিজান” সৈন্য হয়ে গ্রামে ফিরে এলাম। স্থান হ’ল না, মোল্লারা জোতদারের সঙ্গে যোগ দিয়ে লোক ক্ষেপাতে লাগ্লো, আমরা বনে জঙ্গলে থেকে সহৃদয় কিষাণদের সহায়তায় দল গড়তে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত প্রতি-বিপ্লবীদের হট্তে হ’ল। এরা যে কত দুঃখ পেয়েছে, না-বোঝার ফলে কত ভুল করেছে, সে সব স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, লজ্জা হ’ল
১৬১