পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

বিলাসের তারিফ করে টুক্‌রো টুক্‌রো খরমুজা মুখে দিলাম। বরফের মত শীতল, সুস্বাদু এবং মনোরম সুগন্ধ! সম্রাটভোগ্য ফলই বটে!

 অনতিদূরে উলুক বেগের ১৬শ শতাব্দীর মানমন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। সোবিয়েত আমলে এর কিছুটা সংস্কার ও রক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। দেখবার মত বিশেষ কিছু নেই। এর পর আমরা দিগ্বিজয়ী তিমুরের প্রাসাদদুর্গের সম্মুখে এসে দাঁড়ালাম। একটা উঁচু স্থানের ওপর তৈরী, স্তরে স্তরে উঠে গেছে। সম্মুখে তোরণদ্বার, সকলের উপরে নীল রংএর টালিতে ছাওয়া বৃহৎ ডোম। ভিতরে বাসের মহল, তিমুরের স্ত্রী ও দাসীদের কবর, একটা মসজিদ, সেখানে প্রার্থনাবেদী এবং তিমুরের কোরান রয়েছে। সবটা মিলে বিশাল কিন্তু না আছে শ্রী না আছে কোন ছাঁদ। তারও অধিকাংশ ভগ্নস্তূপ। দিল্লী বা আগ্রার মুঘল স্থাপত্যের চরম উৎকর্ষের তুলনায়, চেহারার মিল থাকলেও সূক্ষ্ম কারুকার্যের রুচিবোধ নেই, কোন প্ল্যান তো নেই-ই। সম্রাটের খেয়ালে খাপছাড়া ভাবে তৈরী হয়েছে। তৈরী হয়েছে অগণিত দাসের অস্থি মজ্জা বসা অশ্রুজল ও দীর্ঘশ্বাস দিয়ে। যিনি জয় ও পরকীর্তি ধ্বংসের নেশায় দেশদেশান্তরে উল্কাবেগে ঘুরে বেড়িয়েছেন, জীবনটাই কাটিয়ে দিয়েছেন তাঁবুতে, তাঁর প্রাসাদপুরীতে স্বর্ণ সিংহাসনে বসে রাজ-মহিমা নিশ্চিন্তে উপভোগ করার সময় কোথায়? ভিতরের মসজিদ বা প্রার্থনাঘরে কারুকার্য বিশেষ কিছুই নেই, মলিন গালিচা পাতা রয়েছে। এককোণে দু’জন ইমাম বসে আছেন বিষন্ন মুখে। বোঝা গেল প্রার্থনার সময় আজানের ডাক শুনে

১৬৫