আমার দেখা রাশিয়া
বিশ্বাসী ভক্তেরা আজ আর আসে না। আমি ইঙ্গিত করতে একজন উঠে এলেন। জিজ্ঞাসা করলাম এই কোরান স্পর্শ করতে পারি। অনুমতি দিলেন। সাদা তুলোট কাগজে বড় বড় কালো হরপে লেখা, ভারতের বা ইরানের মধ্যযুগীয় কোরান গ্রন্থের মত নানা রংএর কারুকার্য নেই। দেখা শেষ করে বললাম, আমি হিন্দুস্থান থেকে এসেছি। শুনে খুশীতে তাঁর জরাকুঞ্চিত মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠ্লো। বাঁ হাতে আমার হাত ধরে, ডান হাত তুলে ঈশ্বরের নামে আমায় আশীর্বাদ করলেন। মনে পড়ে গেল, দিল্লীর জুম্মা মসজিদের বৃদ্ধ ইমামের মুখখানি, তাঁরও স্তিমিত দৃষ্টিতে দেখেছিলাম, অতীত দিনের স্বপ্নের ছায়া। ওঁর হাতে কয়েক রুবল গুঁজে দিলাম, বিহ্বল হয়ে আমার মুখের দিকে চাইলেন।
সহরের কেন্দ্রস্থলে তিমুরের বিশাল মসজিদ ভূমিকম্পে তিনচতুর্থাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ফতেপুর সিক্রির মত বৃহৎ খিলান দেওয়া তোরণটি কোনমতে খাড়া আছে। পশ্চিম দিকের অংশটা নানা ভঙ্গীতে ভেঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে, যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে, কাছে যাওয়া বারণ। এর সংস্কার বা পুনর্গঠন অসম্ভব।
অনতিদূরে তিমুরের পৌত্রের তৈরী মসজিদ ও মক্তব। এর মিনার চারটি খাড়া আছে। উত্তর ও দক্ষিণের তোরণদ্বার ও মুশাফিরখানা মেরামত হচ্ছে। পশ্চিম দিকের প্রাচীন বিদ্যালয় ও ছাত্রাবাস অনেকটা অক্ষত। সোবিয়েত গভর্নমেণ্ট বহু অর্থব্যয়ে এর সংস্কার করছেন।
১৬৬