পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

কল্পনারও অগোচর ছিল। হাজার হাজার বছরের চেষ্টায় তৈরী সমাজ ও রাষ্ট্র-ব্যবস্থার দুর্ভেদ্য দুর্গ ধুলিসাৎ করে দিয়ে সোবিয়েত রাশিয়া সর্বমানবের সমানাধিকারের ভিত্তিতে এক নয়া সমাজ-ব্যবস্থা পত্তন করেছে, যার নিন্দা ও প্রশংসা দীর্ঘকাল শুনে এসেছি।

 ১৯১৭-এর মহান্ অক্টোবর বিপ্লব, লেনিন-স্তালিন চালিত বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার দুর্বার সঙ্কল্প বিশ্ব-ইতিহাসের এক বৃহৎ পটপরিবর্তন। প্রথম মহাযুদ্ধে জার্মান আক্রমণে দেশ ক্ষতবিক্ষত; বৈদেশিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির দ্বারা আক্রান্ত, প্রতিবিপ্লবীদের কৃতঘ্ন আঘাত অতিক্রম করে শিশু-সোবিয়েত নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ালো, প্রতি পাঁচ বছরে এক এক শতাব্দী এগিয়ে যাবে, এই তার পণ। দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, বহু কালের দাসত্ব ও শোষণে পঙ্গু মানুষের জড়বুদ্ধি এই দুস্তর বাধা অতিক্রম করে তারা সকল রকম শোষকশ্রেণীর উচ্ছেদ করলো। গড়ে উঠলো এক ঐক্যবদ্ধ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা, যেখানে সর্বসাধারণের অভিপ্রায় ও উদ্যম কেন্দ্রীভূত হয়ে অসাধ্য সাধনকে সম্ভব করল। উদ্দেশ্যের ঐক্য লক্ষ্যের ঐক্য—সমাজতান্ত্রিক কলকারখানা, সমবায় কৃষিপদ্ধতি, সর্বজনীন শিক্ষাবিস্তারের বিস্ময়কর ক্ষিপ্র অগ্রগতির মধ্য দিয়ে যখন এরা কমিউনিজমের দিকে এগিয়ে চলেছে, তখন আচম্বিতে হিটলারের ফাসিস্ত বাহিনীর কৃতঘ্ন আক্রমণ। মনুষ্য জাতির ইতিহাসে কোন দেশ কোন জাতি এত বড় যুদ্ধের সম্মুখীন হয়নি। ভূমিকম্পের মত প্রচণ্ড আলোড়নের মধ্যে দৃঢ়পদে দাঁড়ালেন মার্শাল স্তালিন। তাঁর