পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

হন। তাঁরা অন্তরালে গেলে আবার দ্বিগুণ জোরে হাততালি পড়তে থাকে। এই ভাবে অন্তত তিন-চার বার নট-নটীদের গুণমুগ্ধ ভক্তদের দর্শন দিতে হয়। যবনিকা পড়া মাত্র আমি তো কানে আঙ্গুল দিতাম, পার্শ্ববর্তীরা অবাক হয়ে তাকাত। আনন্দে আত্মহারা হয়ে এই বিরামহীন করতালির মাধুর্য আমি কিছুতেই উপভোগ করতে পারতাম না। এটা আতিশয্য সন্দেহ নেই, কিন্তু এ দেশে শিল্পী লেখক কবির প্রতি লোক-সাধারণের যে অনুরাগ ও শ্রদ্ধা দেখেছি, তা আমাদের দেশের শতকরা আশী জন অশিক্ষিত এবং শিক্ষিতম্মন্য কুশিক্ষিতদের কাছে প্রত্যাশাই করা যায় না।

 এদের অভিনয়, সঙ্গীত, নৃত্যকলার উৎকর্ষ সাধনের পেছনে রয়েছে রাষ্ট্রের সাহায্য। জাতীয় নাট্যশালা আমাদের দেশে এখনও কল্পনার ব্যাপার। কলকাতা সহরে এক কালে বেসরকারী নাট্যশালার সমাদর ছিল। কিন্তু সিনেমার খেলো চটকদার ছবি তাকে কোণঠাসা করে ফেলেছে। অন্যত্র দূরস্থান, রাজধানী নয়াদিল্লীতেও একটা নাট্যশালা নেই। রাশিয়ায় দেখলাম, সিনেমায় বা নাট্যশালায় যৌন আবেদনপূর্ণ অভিনয় নেই, প্রায়-উলঙ্গ নারী-দেহের অংশ-বিশেষকে অনতি-উদ্ঘাটিত করে লোভীদের উদ্‌ভ্রান্ত করা ওখানে অচল। কেন না এরা এগুলোকে লোকশিক্ষার বাহন বলেই মনে করে। লোকের রুচিবোধ নেমে না যায়, সেদিকে এদের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ। আর আমাদের দেশে হলিউডের নকলে চলচ্চিত্র-শিল্পের দিনে-দিনে যে কত অধঃপতন হচ্ছে, তা নিয়ে

২৫