পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার রেখা রাশিয়া

 পড়ুয়ারা আমাদের দেখে সচকিত হয়ে উঠলো। আমরা এগিয়ে গিয়ে দেখি, একটি ১৪ বছরের মেয়ে ভিক্তর হুগোর “নাইনটি থ্রি” পড়ছে, আর একটি মেয়ে পড়ছে, বিশ্ব ইতিহাস। সে ভারতের অংশটা বার করে দেখালো, সম্প্রতি ভারত যে ভাগ হয়ে পাকিস্তান হয়েছে সে খবরও রাখে। এদের সঙ্গে আমরা আলাপ জমিয়ে নিলাম। এ একজন মোটর-চালকের মেয়ে, জিজ্ঞাসা করলে, তোমাদের দেশে কিশোর-আন্দোলন, কিশোর-সঙ্ঘ আছে? উত্তর দিলাম; ছাড়া ছাড়া ভাবে সঙ্ঘ-সমিতি আছে বৈকি? তারা কি করে? বিজ্ঞান-ইতিহাস আলোচনা করে কি না, দেশের পরিচয় লাভের জন্য দল বেঁধে ভ্রমণে যায় কি না? উত্তর দিলাম, এ-রকম সুবিধা আমাদের দেশে খুব কম ছেলে-মেয়েই পেয়ে থাকে। একটি ছোট মেয়ে হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলো, কোরিয়ার যুদ্ধ সম্বন্ধে তোমার মত কি? আমি বললাম, আমাদের দেশের লোক যুদ্ধকে ঘৃণা করে। আমেরিকার এই জুলুমে আমাদের সহানুভূতি কোরিয়ানদের দিকে। সে উৎসাহিত হয়ে বললে; তোমাদের দেশে শান্তি-আন্দোলন আছে? নিশ্চয়ই আছে। আমার কথা শুনে মেয়েটি দ্রুতপদে বেরিয়ে গেল। এক মুঠো চীনে মাটির ছোট্ট ঘুঘু এনে আমাদের জামায় পরিয়ে দিল। আগ্রহ ভরে বললো, তোমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীদের আমাদের অভিনন্দন জানিয়ো, বলো, আমরাও যুদ্ধবিরোধী শান্তি-আন্দোলন করছি।

 এখানে নানা বিভাগ। একটা বড় হল দেখলাম, মাসে দু’বার নামজাদা শিশু-সাহিত্যিকেরা এসে এখানে বক্তৃতা করেন,

২৭