আমার দেখা রাশিয়া
হ’ত না। কিন্তু চোখে দেখার শিক্ষাও কম নয়। দেখতাম, ঝাড়ুদারণী হাতওয়ালা লম্বা ঝাঁটা নিয়ে রাস্তা সাফ করছে, পায়ে জুতো, সিল্কের মোজা, রঙ্গীন ছিটের পোষাক, হাতে হাতঘড়ি, হাঁটু পর্যন্ত একটা সাদা কাপড়ের আবরণী। মাথায় রুমাল দিয়ে চুল বাঁধা। নিটোল স্বাস্থ্য, মুখে বিরক্তির চিহ্ন নেই। চোখের সম্মুখে ভেসে উঠতো কলকাতার মেথরাণীরা, রূপ ও সজ্জার বর্ণনার প্রয়োজন নেই। নীল রঙের কোট, পাতলুন পরা পোর্টার ঠেলাগাড়িতে দুধ বা দৈ-এর বোতল, বরফ নিয়ে চলেছে, আমাদের দেশের মতো শতছিন্ন মলিন কটিবাস পরা নয়। একটি লোকও কোন দিন রাস্তায় ভিক্ষের জন্য হাত পাতেনি। বড় রাস্তার পাশ দিয়ে গলিতে ঢুকেও দেখেছি, উলঙ্গদেহ ধূলি-ধূসরিত অপুষ্ট দেহ ছেলে-মেয়ে নেই। মস্কৌ-এর নাগরিকেরা সকলেই ধনী, স্বচ্ছল এমন কথা বলিনে, কিন্তু আমাদের দেশে হতদরিদ্র, পরের উচ্ছিষ্ট-ভোজী, পশুর মুখের গ্রাস কেড়ে খাওয়া মানুষের সঙ্গে তুলনায়, এরা জীবন যাপনের অসম্মান ও হীনতা থেকে মুক্তি পেয়েছে, এ কথা স্বীকার করতেই হবে।
রোমের রাস্তায় ধুতিপাঞ্জাবী পরে বেরিয়ে বিপন্ন হয়ে পড়েছিলাম, ছেলের দঙ্গলের টিট্কারীর চোটে পালিয়ে এসে হোটেলে ফিরিঙ্গী সেজে বাঁচি। কিন্তু মস্কৌ, স্তালিনগ্রাদ, তাসকেণ্টে আমার বাঙ্গালী পোষাক দেখে, ছেলে-বুড়ো সকলেই বিদেশী বলে সম্ভ্রম দেখিয়েছে। বহু জাতির বাস সোবিয়েতে জাতি, বর্ণবিদ্বেষ একেবারেই লুপ্ত হয়েছে। এর কারণ, সোবিয়েত
৩২