চার
আমরা একটা ‘পাইয়োনীয়র্স ক্যাম্প’ দেখবার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করাতে কুশলকর্মা কমরেড অকসানা ব্যবস্থা করে ফেললেন। ছোটদের লালন-পালন, শিক্ষাপ্রণালী নিয়ে এ দেশে নানা রকম পরীক্ষা ও গবেষণা চলেছে, তার কথা বই-এ পড়েছি, কিন্তু শিক্ষা কি ভাবে মানুষের মন ও চরিত্রের মধ্যে রূপায়িত হয়ে উঠছে সেটা চোখে দেখা স্বতন্ত্র কথা। মস্কৌ থেকে আমরা রওয়ানা হলাম মোটরে, ৬০ মাইল পথ। চওড়া পীচ-ঢালা মসৃণ রাস্তা। সহরের পর গ্রাম আরম্ভ হ’ল। পথের দু’ধারে বাগান-ঘেরা কৃষকের পুরানো ধরনের কাঠের বাড়ি, দূরে দূরে আধুনিক দোচালা ধরনের বাংলো, সব্জীবাগান ও অবারিত শস্যক্ষেত্র, কোথাও রাই ও গমের শীষ বাতাসে দুলছে। কোথাও বা আলুর ক্ষেত। তারি মাঝে মাঝে বার্চ, পাইনের বন। এখানকার জমি আমাদের দেশের মত আল দিয়ে টুকরো টুকরো করা নয়। দিগন্তে শ্যামল বনরেখাবলয়িত প্রসারিত শস্যক্ষেত্রগুলি দেশের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল। ক্রমে বড় রাস্তা ছেড়ে একটা কাঁচা রাস্তায় আসা গেল। গ্রামের মধ্য দিয়ে বাঁক ঘুরে ঘুরে চলেছি, বাড়িগুলোর উঠানে ছাগল ভেড়া মুরগী, পুকুরে হাঁস, বাইরে চেয়ারে বসে মেয়েরা উল বুনছে, ছেলে-মেয়েরা খেলা করছে। সব চলচ্চিত্রের ছবির মত দু’পাশে সরে যাচ্ছে।
৩৪