আমার দেখা রাশিয়া
গেলেন। এটা খাও ওটা খাও বলে অনুরোধ, ঠিক আমাদের দেশের মেয়েদের মতই। পশ্চিমী শিষ্টাচারের আড়ষ্টতা নেই। আমার পাশে যে মেয়েটি বসেছিল, দীর্ঘদেহ উন্নত নাসা আয়ত নীল চক্ষু সর্বাবয়ব সুঠাম ও হাস্য পরিহাসে উচ্ছল হয়ে উঠেছে; এমন সময় আমি বললাম, ‘তুমি রূপে লক্ষ্মী, গুণেও হয়তো সরস্বতী, বিয়ে করনি কেন? তোমার পাণিপ্রার্থীর নিশ্চয়ই অভাব নেই।’
পলকে ওর মুখে বিষাদের ছায়া নামলো। গাঢ় স্বরে বললে, ‘বিয়ে হয়েছিল, এখন বিধবা, গত যুদ্ধে আমার স্বামী মারা গেছে।’
‘বিধবা বিবাহ তো তোমাদের সমাজে অগৌরবের নয়।’
‘নিশ্চয়ই নয়। যুক্তির দিক দিয়ে যখন চিন্তা করি, তখন বুঝি এই বৈধব্যের কোন মানে হয় না। কিন্তু হৃদয়াবেগ স্বতন্ত্র জিনিষ। আজ ছয় বছরেও তার স্মৃতি মন থেকে মুছে ফেলতে পারিনি। পরস্পরের প্রতি গভীর ভালবাসা ও বিশ্বাস নিয়ে আমরা নীড় রচনা করেছিলাম। স্বদেশপ্রেমিক সাহসী যুবক, ফাসিস্ত দস্যুদের আক্রমণ থেকে পিতৃভূমি রক্ষার যুদ্ধে ছুটে গেল। বীরত্ব ও যুদ্ধে কৃতিত্বের জন্য ও তিনটে সোনার মেডেল পেয়েছিল। আমাদের মহান নেতা কমরেড স্তালিনের প্রতিমূর্তি অঙ্কিত মেডেলটা আমি আজীবন বুকে বহন করবো। ভাবি, এত দিনে হয়তো আমাদের ছেলেপুলে হত। তা যখন হয়নি, তখন এই পাইয়োনীয়র্সদের মধ্যেই আমার ছেলে-মেয়েদের পেয়েছি; এদের সেবা করি, আর শান্তির কথা বলি। যুদ্ধ বড় ভয়ঙ্কর সর্বনাশের।’ বলতে-বলতে
৩৮