পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

বেশী ফলনের গাছ দেখালেন। বিজ্ঞানকে কৃষিকাজে প্রয়োগ করে দীর্ঘকালের গবেষণা পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের ফলে কোন্ ফল ফুল ফসলের কতটা উন্নতি হয়েছে তা বোঝালেন। এ সব বুঝবার মত পাণ্ডিত্য আমাদের অবশ্য কারো নেই, তবে সাংবাদিকসুলভ সর্ববিদ্যাবিশারদের ভান করে আমরা কয়েকটি প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, উত্তর মেরুর কাছাকাছি স্বল্পস্থায়ী গ্রীষ্মকালে দ্রুত গম উৎপাদনের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে; তবে একবার গম বুনে ২।৩ বার ফসল পাওয়া এখনও সাফল্যলাভ করেনি। ফলের বাগানে বিশেষ সার প্রয়োগ এবং কলম করে, আপেল পীয়ার প্রভৃতির ফলন ও আয়তন বেড়েছে দেখলাম।

 এর পর অধ্যক্ষ আমাদের গো-পালনাগারে নিয়ে গেলেন। কয়েকটি বিভিন্ন জাতের ষাঁড় আর শ’দেড়েক গাভী রয়েছে। এখানে মিশ্র প্রজননে গোবংশের উন্নতির চেষ্টা চলছে। এ রকম অতিকায় গাভী আমি জীবনে দেখিনি। দৈনিক আধমণ থেকে ত্রিশ সের দুধ দেয় শুনে বিশ্বাস না হয়ে উপায় নেই। এখান থেকে দেশের নানা কেন্দ্রে উৎকৃষ্ট ষাঁড় ও গরু পাঠান হয়। আমাদের দেশের খর্বকায়া, বিশুষ্কস্তন্যা গো-মাতাদের রূপ চকিতে মনে পড়ে গেল। ‘গৌ মাতাকে লিয়ে’ আমরা নরহত্যাকে পুণ্য মনে করি, না খেতে দিয়ে বাছুর মেরে ফেলা, ফুঁকো দিয়ে দুধ দোহাকে আমরা পাপ মনে করিনে। গরুর প্রতি আমাদের দরদের একমাত্র প্রমাণ আইন সভায় আমরা গাভী হত্যা আইনতঃ নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু কেবল রাশিয়ায় কেন, সমগ্র ইয়োরোপে

৫৭