আট
মস্কৌ-এ ট্রাম বাস ট্রলীবাস অজস্র। এগুলি সহর ও সহরতলীতে অবিশ্রাম যাতায়াত করে। ভীড় আছে, কিন্তু ঠাসাঠাসি নেই। তার কারণ, এখানে মেট্রো বা ভূগর্ভ রেলপথ রয়েছে। এতে প্রত্যহ ১৭ লাখ লোক যাতায়াত করে। এটা মস্কৌবাসীদের একটা গর্বের জিনিষ। এক দিন বেলা তিনটের সময়, আমরা হোটেলের অনতিদূরে ‘রিভলিউশান স্কোয়ারে’র স্টেশনে উপস্থিত হলাম। এলিভেটারে বা এস্কোলটারে দাঁড়াতেই সর-সর করে পাতালপুরীতে নেমে গেলাম। পাতালপুরীই বটে! এর নাম রেল-ইষ্টিশান? এ যে পরীরাজ্যের রহস্যময় প্রাসাদ! মসৃণ মর্মরে বাঁধান চত্বর, পাথরের রং মিলিয়ে দেয়ালে কত কারুকার্য! ২৫ হাত চওড়া, দেড়শ’ হাত লম্বা চত্বরের দু’পাশে বিপ্লবী ও গত যুদ্ধের নানা শ্রেণীর বীরদের ব্রোঞ্জ নির্মিত অতিকায় মূর্তির সমাবেশ, কি গঠন-ভঙ্গিমা, যেন সোবিয়েতের স্বদেশরক্ষার মৃত্যুপণ সঙ্কল্প আপনাতে আপনি অটল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুগ্র উজ্জ্বল আলোকে চার দিক উদ্ভাসিত, কোথাও ধুলো-ময়লা নেই। এরই দু’পাশে প্রশস্ত বারান্দা বা প্ল্যাটফর্ম, প্রতি দু’মিনিট পর পর গাড়ি আসছে-যাচ্ছে, সুশৃঙ্খল ভাবে যাত্রীরা ওঠা-নামা করছে।
৬৯