আমার দেখা রাশিয়া
গভর্নমেণ্টের আমলে প্রাক্-বলশেভিক বিপ্লবীরা সেগুলি ধ্বংস করে ফেলেছিল।
ক্রমে অগ্রসর হয়ে আমরা জারের দুর্গে প্রবেশ করলাম। বড় বড় দু’তিনটি গীর্জা। একটি গীর্জার প্রাঙ্গণে শ্বেত ও কৃষ্ণ মর্মরে জার ও জারিনাদের সমাধি, দেয়ালের গায়ে বাইবেলের কাহিনীর চিত্র। এগুলিতে এখন আর প্রার্থনা করবার জন্য নরনারীর ভীড় হয় না, কৌতূহলী জনতা ম্যুজিয়ম দেখতে আসে। দুর্গের মধ্যে প্রাচীন কারাগার। এর সেলগুলি এক একটি ভয়াবহ অন্ধকূপ, বারান্দায় পাহারারত প্রহরীর জুতোর শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যেতো না। কলকাতার প্রেসিডেন্সী জেলের ৪০ ডিগ্রীর সেলগুলি এর তুলনায় আরামপ্রদ। এক একটি সেল যেন সাম্রাজ্যনীতির প্রতিহিংসার নিষ্প্রাণ নিষ্ঠুরতা। এখানে কত বিপ্লবী পাগল হয়েছে, কত আত্মহত্যা করেছে; কত প্রতিভাশালী যুবকের সুগঠিত দেহ জরায় জীর্ণ হয়ে গেছে এই নিরানন্দ পুরীতে। লেনিনের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ১৯ বছরের যুবক উলিয়ানভ ফাঁসির পূর্বে যে সেলটিতে ছিলেন সেটি এবং গর্কী ও অন্যান্য প্রাক বলশেভিক বিপ্লবীদের সেলগুলি চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। ১৯০৪-৬ সালের বিদ্রোহের সময় এই জেলখানায় অতি বীভৎস নারকীয় অত্যাচার হয়েছে, তার কতকগুলি মরচে ধরা পীড়ন যন্ত্র দেখলাম। মন বিষাদে ভরে উঠ্লো। মনে পড়লো, আমাদের দেশের ইলিসিয়াম রোর (অধুনা লর্ড সিংহ রোড) গোয়েন্দা ঘাঁটির কথা। পীড়ন করে পেটের কথা বার করবার ওস্তাদিতে
৮২