পাতা:আমার দেখা রাশিয়া - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৯৫২).pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার দেখা রাশিয়া

বিপ্লবী সেনাদের সম্মুখে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ৪৭ বৎসর বয়সের লেনিনের তৈলচিত্র, সুগঠিত দেহ উজ্জ্বল মর্মভেদী দৃষ্টিতে তেজস্বী জীবনের বহ্নিজ্বালা, কক্ষগাত্রে বিলম্বিত।

 বলশেভিক বিপ্লবের ইতিবৃত্ত আলোচনা করতে করতে আমরা নগর ছাড়িয়ে অগ্রসর হলাম। মেঘের ঘোমটা সরিয়ে সূর্য প্রকাশ পেয়েছে, সদ্যস্নাত গাছের পাতাগুলি চিকচিক করছে, প্রশস্ত পথের দু’ধারে অজস্র রঙ্গীন ফুল ফুটে রয়েছে, মাঠের মধ্যে নূতন বাড়ী, তার পাশেই জার্মান আক্রমণে বিধ্বস্ত ও পরিত্যক্ত বাড়ীও রয়েছে। ক্রমে আমরা পুসকিন গ্রামে প্রবেশ করলাম। এটা জার্মানরা দখল করেছিল, দু’পক্ষের গোলাগুলী বর্ষণে অধিকাংশ বাড়ীই জখম হয়েছিল। আবার এরা আরো সুন্দর করে বাড়ী বাগান পথ গড়ে তুলেছে। এখানকার এক বিশাল জারীয় প্রাসাদে জার্মান সৈন্যরা থাক্‌তো, পালাবার সময় ইচ্ছে করে এর ক্ষতি করে গেছে, শিল্পকলার নিদর্শনগুলি কতক লুট করেছে, কতক নষ্ট করে গেছে। বাড়ীটা খাড়া আছে, তাই ধীরে ধীরে মেরামত হচ্ছে। এর একটা অংশ মেরামত করে পুসকিন ম্যুজিয়ম হয়েছে। বহু চিত্র ও পুরনো শিল্পের নিদর্শনের সংগ্রহ। এখানে নবীন রাশিয়ার অফুরন্ত প্রাণশক্তির প্রাচুর্য, নব সৃষ্টির আনন্দে বিকশিত হচ্ছে নগর নির্মাণের সুষ্ঠু পরিকল্পনায়।

 আমরা যখন সহরে ফিরে এলাম, তখন সূর্যের আলো ম্লান হয়ে এসেছে, নেভা নদীর গাঢ় নীল জলে রক্তিম আলো কাঁপছে।

৮৪