পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2θίν আমার বোম্বাই প্রবাস কলকারখানার দোকান আছে, তাহাতে ছাত্রগণ নানাবিধ শিল্পকার্য্য শিক্ষা করে এবং তাদের হাতের কাজ বাস্তবিক প্রশংসার যোগ্য । দেখতাম অনেক বাঙ্গালী ছাত্র এখানে এসে অধ্যয়ন করছে, তাদের ভবিষ্যৎ উন্নতিরও যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে । আমাদের একটি আত্মীয়কে সেই কলেজে দেবার ইচ্ছা ছিল । সেখানে তাকে ভর্ত্তি করে দেওয়া গেল, পুণায় থাকবার এমন সুবিধা করে দিলাম যা অন্ত কোন বিদেশী ছাত্রের সহজে হয় না—স্বয়ং মহাদেব গোবিন্দ রাণাড়ে ছেলেটিকে নিজ বাটতে আশ্রয় দিতে স্বীকৃত হলেন। সবই হল কিন্তু দৈব প্রতিকূল । তাকে কি একটা রোগে ধরলে, বৈদ্যশাস্ত্রে যার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না । শেষে জানা গেল সে রোগের নাম Home sickness, কিছুতেই ওদেশে তার মন টি কলো না । মার কোলে ফিরে এসে ছেলে তবে নিস্তার পায়। পৃথিবীতে দু রকম লোক আছে, কেউ কেউ প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধে উজান বয়ে যেতে অক্ষম। কেহ বা অবস্থা যেমনই হোক তাকে আপনার মনের মতন করে গড়ে নিতে পারেন, যিনি আত্মবলে আপনি আপনার ভাগ্যবিধাত । প্রকৃতি ও আত্মশক্তি, দৈব ও পুরুষকার, মানুষের এই দুই ভাগ্য-সুত্রধার । এদের মধ্যে আত্মবান পুরুষই ধন্ত । “দৈবং নিহত্য কুরু পৌরুষমাত্মশক্ত্যি।” এই উপদেশ মত কার্য্য কর, কৃর্তী হবে-মানুষ হবে। গোবিন্দ বিঠল কড়কড়ে গোবিন্দ কড়কড়ে পুণা ( দক্ষিণ ) কলেজে গণিতশাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন । তিনি আমাদের অনেককালের বন্ধু। যখন প্রথম বিলাতে গিয়ে জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুরের বাড়ীতে বাস করি তখন তার সহিত সর্ব্বদা দেখা সাক্ষাৎ হত—সে ত পঞ্চাশ বৎসরেরও আগেকার কথা। আমার বোম্বাই প্রবাসকালে আমরা বরাবর বন্ধুত্বহুত্রে বাধা ছিলাম—আজ পর্য্যন্ত তা অটুট রয়েছে। মারাঠা জাতির অনেক পদবীই বাঙ্গালীর পক্ষে কৌতুকাবহ কিন্তু নাম ছাড়াও গোবিন্দ কড়কড়ের অনেকগুলি ভাবসাব হাস্তরসাত্মক। তিনি জাতিতে ব্রাহ্মণ, ধর্ম্মে খৃষ্টান, ব্যবসায়ে অধ্যাপক, এবং স্বভাবে কিঞ্চিৎ পাগল। এমন কি, চাকর এবং ছেলেদের মহলে তিনি “পাগলা সাহেব” বলেই খ্যাত ছিলেন। "ছিলেন” শুনে যেন কেউ না মনে করেন যে বেচারা গোবিন্দ ইহলোকে নাই। আশা করি আমাদের