অরুণকুমার শর্মা আমাদের দেশের বড় মাপের বিজ্ঞানী। এই বিশিষ্ট উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির গোল্ডেন জুবলি প্রফেসর। ফেডারেশন অফ এশিয়ান সায়েন্টিফিক অ্যাকাদেমিজ অ্যান্ড সোসাইটিজের প্রেসিডেন্ট। ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল সায়েন্স অ্যাকাদেমির প্রাক্তন সভাপতি।
অরুণবাবুর প্রশ্ন, “এই যে অ্যাকসিডেন্টাল ফর্মে লাইফ এল, এর পুরোটাই কি অ্যাকসিডেন্ট?”
উত্তর অরুণবাবুই দিয়েছেন, “পুরোটা অ্যাকসিডেন্টে চলছে না, প্রোগ্রাম করে চলছে—একজন প্রোগ্রামার আছেন। তাঁকেই আমি ঈশ্বর বলে মানি। তিনি সাকার নন, নিরাকার, সকলের মধ্যেই তিনি আছেন। আমরা বাইরে যা দেখছি তা তাঁরই অভিব্যক্তি। আমাকে আপনি অদ্বৈতবাদী বলতে পারেন।
অবশ্য তারপরই একটা বেফাঁস কথা শ্রীশর্মা বলেছেন। তাঁর কথায়, “আমি ধ্যান করি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঠাকুর রামকৃষ্ণের মূর্তি কল্পনা করে কিছুক্ষণ আমি ধ্যান করি, তাঁকে আমি মনের মধ্যে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। অবতাররা তো ঈশ্বর নন, তাঁরা ঈশ্বরোপলব্ধির পথপ্রদর্শক। তাঁরা গুরু। আমার গুরু ঠাকুর রামকৃষ্ণ।
শিষ্য অরুণবাবু সোচ্চার ঘোষণা রেখেছেন—ঈশ্বর সাকার নন, নিরাকার। গুরু রামকৃষ্ণ সাকার কালীর সঙ্গে কথা বলেছেন, দেখেছেন, মায় খুনসুটি পর্যন্ত করেছেন। অরুণবাবুর কথায়, “ঈশ্বরকে ধরাছোঁয়া যায় না, দেখা যায় না।” তবু তারপরও অরুণবাবুর গুরু রামকৃষ্ণ! সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ! এখানে বিজ্ঞানীর মুখ থেকেই গড়গড় করে বেরিয়ে আসে জ্ঞানহীনের মত বিপরীত চিন্তা, বিশৃঙ্খল চিন্তা, যুক্তিহীন চিন্তা, বিজ্ঞান-বিরোধী চিন্তা। এদেশে বুদ্ধিজীবীর সম্মান পান অপুষ্ট বুদ্ধির মানুষ?
বিজ্ঞানী অরুণকুমার শর্মা যে লাইফ বা প্রাণের আবির্ভাবের মধ্যে ঈশ্বরের প্রোগ্রামকে আবিষ্কার করেছেন, সেই প্রাণের আবির্ভাব প্রসঙ্গে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ডঃ রমেন্দ্রকুমার পোদ্দার বলেন, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড থেকে প্রাণ, কোনও কিছুই ঈশ্বরের সষ্টি নয়। তাঁর কথায়, “ঈশ্বর এসব কিছুই সৃষ্টি করেননি, এসব সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্টির নিয়মে—এবং হঠাৎ একদিনে সৃষ্টি হয়নি। হয়েছে ধীরে ধীরে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। এই পৃথিবীতে যা-কিছু দেখছেন—সমস্ত পদার্থ, গাছপালা পশু পাখি কীট পতঙ্গ মানুষ ইত্যাদি সমস্ত কিছু—কতকগুলে পরমাণুর সমষ্টি, a collection of atoms। মানুষের ক্ষেত্রে শুধু collection of atoms বললে হয় না, বলতে হয় a highly organised collection of atoms। কারণ প্রকৃতির রাজ্যে মানুষ হচ্ছে সর্বোন্নত জীব, মানুষ এসেছে সবার শেষে।”
“বিজ্ঞান বলে, এই পৃথিবী যেমন একদিনে সৃষ্টি হয়নি তেমনি মানুষও একদিনে সৃষ্টি হয়নি। আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি বছর আগে হঠাৎ
১২৮