পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 পাকিস্তানের একটি উল্লেখযোগ্য নতুন বই 'গড ইউনিভার্স অ্যাণ্ড লাইফ'। লেখক, মোহাম্মদ মুনির। যাঁরা ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের মেলবন্ধন ঘটাতে চাইছেন, তাঁদের কাছে বইটি যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে। বইটির ২৫ পৃষ্ঠায় লেখক লিখেছেন, “আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, পারমাণবিক অবদানগুলো অধ্যাত্মিক। বস্তুবাদীরা আমাদের যে ভাবে প্রোটন ও নিউট্রনে আকর্ষণের ক্ষেত্রে তড়িৎ চুম্বকীয় শক্তিকে বিশ্বাস করতে বলেন, আসলে তা কিন্তু সত্যি নয়। ভাবতে অবাক লাগে, যখন নর ও নারী একে অপরের পিছু ছুটছে, প্রেমে লিপ্ত হচ্ছে, তখন সেই নর-নারীরাই এই বৈজ্ঞানিক সত্যটি উপলব্ধি করতে পারেনি, যে প্রোটন ও নিউট্রন দুই লিঙ্গে বিভক্ত।”

 বুঝুন ব্যাপারটা! পরমাণুর মধ্যে আত্মার আবিষ্কার এবং প্রোটন ও নিউট্রনে দুই বিপরীত লিঙ্গের আবিষ্কার! মুনির সাহেব তাঁর এমন যুগান্তকারী আবিষ্কারকে বিজ্ঞানের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে অবহেলে নোবেল জিতে নিতে পারেন।

 মিশরের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ডঃ রাশাদ খলিফা অত্যাধুনিক কম্পিউটারের সাহায্যে কোরআন বিশ্লেষণ করে, বিশ্লেষিত তথ্যের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, কোরআন নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর রচনা এবং কোরআনই অলৌকিকের অস্তিত্বের প্রমাণ। ডঃ খলিফা এ বিষয়ে একটি বইও লিখে ফেলেছেন, ‘দি কম্পিউটার স্পিকন্ গডস্‌ মেসেজ টু দি ওয়ার্ল্ড'। খলিফা সাহেবের আবিস্কৃত তথ্যের ভিত্তিতে মোঃ আবদুর রজ্জাক লিখেছেন, 'আল-কোরআন সর্বশ্রেষ্ঠ মোজেযা এবং উনিশ। 'মোজেযা' কথার অর্থ ‘অলৌকিক ব্যাপার'। মোজেযা এবং উনিশ' শব্দ দুটি নামকরণের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সার্থকতা এই যে, আল্লাহে বিশ্বাসী বিজ্ঞানী খলিফা সাহেব কম্পিউটারের সাহায্যে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন— উনিশ সংখ্যাটি পরম বিস্ময়কর ও চরম অলৌকিকত্বের চাঞ্চল্যকর তথ্যের বিস্তারিত নির্ভুল বর্ণনা!

 কোরআন যে আল্লাহেরই রচনা, তাই চূড়ান্ত বিজ্ঞান, এবং অলৌকিক অস্তিত্বের পক্ষে অকাট্য প্রমাণ—একথা জানিয়ে ‘জনাব প্রবীর ঘোষ-কে প্রীতি ও শুভেচ্ছার উপহার হিসেবে' একটি চিঠিসহ বইটি পাঠিয়েছিলেন লেখক।

 সে সময় উত্তর দিইনি। মনে হয়েছিল এসব পাগলামীর যোগ্য জবাব হতে পারে—উপেক্ষা। কিন্তু আজ পৃথিবী জুড়ে বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের ও ঈশ্বরের মেলবন্ধন ঘটাবার যে চেষ্টা শুরু হয়েছে, তাতে এইসব বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের পাগলামী কতটা নির্ভেজাল, কতটা নির্ভেজাল তাঁদের অজ্ঞতা, অন্ধবিশ্বাস—এই নিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ দেখা দিয়েছে। প্রচারমাধ্যমগুলো, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দলগুলো প্রচার শুরু করেছে - বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের ও ঈশ্বরের কোনও বিরোধ তো নেই-ই, বরং মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থেই এই বিরোধ মিটিয়ে ফেলার সময় হয়েছে। এঁরা নিজেদের

১৩৯