পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 যিশুর পরম ভক্ত মাদার টেরিজা, যিনি কিনা সবেতেই পরম করুণাময় যিশুর হাত দেখতে পান, তিনিও কিন্তু পুরুষকারকে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। একবার টেরিজার সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। টেরিজা শেষে জনগণের উদ্দেশে যিশুর শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়ে জনগণকে আর্তের সেবায় এগিয়ে আসতে বললেন।

 টেরিজাকে বললাম, পরম করুণাময় যিশু একটু কৃপা করলেই তো আর্তরা আর আর্ত থাকে না। সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যিশু এমনটা করছেন না কেন? নিদেনপক্ষে পরমকরুণাময় যিশু জনগণকে আর্তের সেবায় তো নামিয়ে দিতে পারতেন? হয় তো যিশুর ইচ্ছে নয় বলেই অ-আর্তেরা আর্তের সেবায় নামছে না।

 টেরিজা জানালেন, আমি যেভাবে ভাবছি, সেটা ভুল। আর্তের সেবায় আত্মোৎসর্গের জন্য মানুষের চাই আর্তের প্রতি ভালবাসা, আর্তের জন্য কিছু করার ইচ্ছে ও সেটাকে কাজে রূপ দেওয়ার চেষ্টা।

 অর্থাৎ কিনা, টেরিজাও মানুষের কাজ করার ইচ্ছে বা পুরুষকারকে স্বীকার করে নিলেন।

 এইসব ঈশ্বর বিশ্বাসী ধর্মগুরু বা আধা-ধর্মগুরুদের অদ্ভুত স্ববিরোধিতা কেমনভাবে বেরিয়ে এসেছে, দেখলেন তো? একবার বলেন, ঈশ্বরের ইচ্ছে ছাড়া কিচ্ছুটি হবার নয়; আর একবার বলেন, মানুষের প্রবল ইচ্ছেয় অনেক অসম্ভবই সম্ভব হয়। অর্থাৎ ঈশ্বরের ইচ্ছেকেও পাল্টে দেওয়া সম্ভব, অর্থাৎ মানুষের ইচ্ছে প্রবল হলে ঈশ্বরের ইচ্ছের চেয়েও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।

 ঈশ্বরের তৈরি মানুষ যদি পুরুষকার প্রয়োগ করে যখন তখন ঈশ্বরের ইচ্ছেকে নাকচ করে দেবার ক্ষমতাই রাখে, তবে তো বলতেই হয়, মানুষের ইচ্ছেই ঈশ্বরের ইচ্ছের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এমন এক দুর্বল শক্তিকে ‘সর্বশক্তিমান' বলাটা কি তবে নেহাতই পাগলামী নয়?

O

ঈশ্বরের তৈরি মানুষ যদি পুরুষকার প্রয়োগ করে যখন তখন ঈশ্বরের ইচ্ছেকে নাকচ করে দেবার ক্ষমতাই রাখে, তবে তো বলতেই হয়, মানুষের ইচ্ছেই ঈশ্বরের ইচ্ছের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এমন এক দুর্বল শটিকে সর্বশক্তিমান' বলাটা কি তবে নেহাতই পাগলামী নয়?

O

 এই যুক্তির পরও কোনও কোনও ঈশ্বর-বিশ্বাসী বলতে পারেন, বলেও থাকেন—পুরুষকারেই কি সব কিছু হয়? কিছুটা পুরুষকার ও কিছুটা ভাগ্যবিধাতার ভাগোর লিখন, এই দুয়ে মিলে আসে সাফল্য।

 এই কথাকে সত্য বলে ধরে নিলেও কিন্তু 'ঈশ্বর সর্বশক্তিমান'–জাতীয়

১৮১