পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আত্মার অনিত্যতায় বিশ্বাসী জীবনের সায়াহ্নে এসে নিরীশ্বরবাদী হয়েছেন। এরা কেউই খামখেয়ালীপনা করে নিরীশ্বরবাদী সাজেননি। অনেক জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজে, অনেক ভেবে, বুঝে তবেই নিরীশ্বরবাদী হয়েছেন। শান্তিদা'র মত মানুষ পরিবেশগতভাবেই রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের পরম ভক্ত ছিলেন যৌবনের সীমানা পেরুবার আগে পর্যন্ত। বইমেলায় আমাদের বই হাতে পড়েছে। নেড়ে-চেড়ে কিনেছেন। পড়েছেন, চিন্তা নাড়া খেয়েছে। নতুন করে ধর্মের বইয়ে মনোনিবেশ করেছেন। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই করেছেন। যতই গভীরে গেছেন, ততই তাঁর চোখে ধরা পড়েছে ফাঁক আর ফাঁকিগুলো। উৎসাহিত শান্তিদা জীবনের শেষ লগ্নে পড়েছেন বিজ্ঞান-দর্শন-রাজনীতি। তারপর উল্লিখিত প্রতিটি মানুষের মতই শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদের পথ।

 বরং একথা আমরা জোরের সঙ্গেই বলতে পারি—এইসব ঈশ্বরাদীর জোর আর কদ্দিন? চেতনায় যুক্তির ছোঁয়া পোঁছলেই তো খেল খতম।

O

একথা আমরা জোরের সঙ্গেই বলতে পারি—এইসব ঈশ্বরবাদীর জোর আর কদ্দিন? চেতনায় যুক্তির ছোঁয়া পৌঁছলেই তো খেল খতম।

O


কারণ: বারো

এতো ভাল দুশ্চিন্তায় পড়া গেল! সব কিছু নিয়ন্তা ঈশ্বর কেন যুক্তিবাদীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না?

ঈশ্বর, আল্লাহ সব কিছুর নিয়ন্তা। সর্বশক্তিমান। তাঁর ইচ্ছে ছাড়া গাছের পাতাটি নড়ে না, মানুষের নিঃশ্বাস পড়ে না। তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন তাঁরই ভজনার জন্য। তাঁরই গুণ-কীর্তনের জন্য। তাহলে সমস্ত মানুষকে দিয়ে তাঁর গুণ-কীর্তন করাতে পারছেন না কেন? যুক্তিনিষ্ঠ মানুষগুলো ঈশ্বর, আল্লাহের গুণ-কীর্তন করা তো দূরের কথা, বরং অস্তিত্ব নিয়েই টানা-হ্যাঁচড়া শুরু করেছে। ঈশ্বর এইসব যুক্তিবাদী মানুষদের কেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না? কেন ওইসব বে-আক্বেলেদের মুখ থেকে ঈশ্বর-আল্লাহের ভজনা বের করতে পারছেন না? তবে কি যুক্তিবাদীদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তাঁদের নেই? যুক্তিবাদীদের কাছে ঈশ্বরজাতীয়দের সব জারিজুরিই কি তবে নেহাতই ফক্কা?

98
৩৪