পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 জেব্রাইল ফেরেস্তার কাজ পয়গম্বরদের কাছে খোদাতালার আদেশ পৌঁছে দেওয়া। হজরত মোহাম্মদ পৃথিবীর শেষ পয়গম্বর। আর কোনও পয়গম্বর যেহেতু জন্মাবেন না, তাই জেব্রাইল ফেরেস্তার কাজ শেষ। কে জানে, বেচারা এখন কী করছেন? হয়তো তাঁর অবস্থা এখন—'ছুঁচোর গোলাম চামচিকে, তার মাইনে চোদ্দ সিকে'।

 মেকাইল ফেরেস্তার হাতে রয়েছে আবহাওয়া ও খাদ্য দপ্তর| মেকাইল যে খুবই অকর্মণা ফেরেস্তা, এটুকু বুঝতে বেশি আলোচনার প্রয়োজন নেই। অকর্মণ্যতার জ্বলন্ত নিদর্শন পয়গম্বরের দেশ আরবেই বৃষ্টিপাতের নামগন্ধ নেই, নেই চাষবাস। সোমালিয়ার মুসলিমরা মারা যায় দুর্ভিক্ষে। ফি বছর বাংলাদেশের মুসলিমরা সাইক্লোন ও বন্যার কবলে পড়েন। তার দরুন ঘটে বিপুল মৃত্যু ও সম্পত্তিহানি। আল্লাহ যদি নিরপেক্ষই হন, তবে তাঁর ফেরেস্তা কী করে পক্ষপাতিত্ব দেখাবার সুযোগ পান। কী করে কোনও অঞ্চল হয় শস্যশ্যামলা, কোনও অঞ্চল চূড়ান্ত অনুর্বর; কোনও অঞ্চলে বন্যার আধিক্য, কোনও অঞ্চলে খরার; কোনও মানুষের ঘরে খাদ্যের প্রাচুর্য, কোনও মানুষের ঘরে চরম দারিদ্র্য।

O

আল্লাহ যদি নিরপেক্ষই হন, তবে তাঁর ফেরেস্তা কী করে পক্ষপাতিত্ব দেখাবার সুযোগ পান। কী করে কোনও অঞ্চল হয় শস্যশ্যামলা, কোনও অঞ্চল চূড়ান্ত অনুর্বর; কোনও অঞ্চলে বন্যার আধিক্য, কোনও অঞ্চলে খরার; কোনও মানুষের ঘরে খাদ্যের প্রাচুর্য, কোনও মানুষের ঘরে চরম দারিদ্র্য।

O

 এস্রাফিল ফেরেস্তা একটা শিঙা হাতে নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়েই আছেন, কবে আল্লাহ শিঙা ফোঁকার আদেশ দেবেন—এই প্রত্যাশায়। কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ের মুহূর্তটি কবে আসবে—তা কি আল্লাহের অজানা? তাই বহু কোটি বছর আগে থেকেই এস্রাফিলকে সৃষ্টি করে শিঙা হাতে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন? আল্লাহকে কেউ কি তবে কেয়ামতের দিনটি জানাবেন? কে জানাবেন?

 আজ্রাইল ফেরেস্তার ডিউটিটা অনেকটা হিন্দুদের যমদূত'–এর মত। আজ্রাইল-ই মানুষের মৃত্যুর কারণ। রোগ, দুর্ঘটনা—ইত্যাদি নিমিত্ত মাত্র।

 মানুষের মৃত্যু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত আত্মার কাজ কী? মুসলিম ধর্মবিশ্বাসীরা মনে করেন মৃতকে কবর দেওয়ার পরই ‘মনকির' ও 'নকির' নামের দই ফেরেস্তা এসে মৃতকে আবার বাঁচিয়ে তোলে এবং তাকে নানা প্রশ্ন করে পরীক্ষা নেয়। উত্তরে খুশি না হলে ওই দুই ফেরেস্তা মৃতের উপর অমানুষিক অত্যাচার চালায়। শেষ অবধি গদার আঘাতে মৃতদেহকে ৭০ গজ মাটির নীচে পুঁতে রাখে। আবার মৃতদেহ তুলে এনে অত্যাচার চালায় এবং সুড়ঙ্গপথে দোজখ

৪৩