পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লেপ্‌টন-কণা, সবই বস্তুর সুক্ষ্মতম কণাজগতে ঘাঁটি গেড়েছে। এরই সঙ্গে রয়েছে বলের আদান-প্রদানের জন্য একগুচ্ছ মেসন-কণা ও ফোটন-কণা। অসংখ্য এই কণার রাজ্যে বস্তুর মৌলরূপের পরিচয় এখনও প্রশ্নাতীত ভাবে বিজ্ঞানের কাছে ধরা পড়েনি। গভীর দৃষ্টিতে এই জাতীয় কণাবস্তুর আচরণ কিছুটা অবস্তু-সুলভ ঠেকে, কিন্তু তাকে কোনও ভাবেই চৈতন্যের প্রমাণ হিসেবে বিজ্ঞান গ্রহণ করেনি।

 শ্রীসেন বস্তুর চৈতন্যকে প্রতিষ্ঠা করার তীব্র আকুতিতে কিছু বিজ্ঞানীর মতামত হাজির করেছেন; যে-সব মতামত স্পষ্টতই অনুমানমাত্র, কোনও প্রমাণিত সত্য নয়। চৈতন্য যদি বস্তুর মৌলরূপ হয়, তবে বিজ্ঞান একদিন তা প্রমাণও করবে। যতদিন না প্রমাণ হচ্ছে, ততদিন এই অনুমান বা কল্পনাকে ‘বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত' বলে প্রচার করাটা আদৌ নৈতিক নয়। তবে সন্দেহের অবকাশ থেকে গেল, এই ভ্রান্ত বা মিথ্যে লেখা ও প্রচারের পিছনে অজ্ঞতা কতটা দায়ী? নাকি এর পিছনে রয়েছে গভীর কোনও পরিকল্পনা?

O

চৈতন্য যদি বস্তুর মৌলরূপ হয়, তবে বিজ্ঞান একদিন তা প্রমাণও করবে। যতদিন না প্রমাণ হচ্ছে, ততদিন এই অনুমান ৰা কল্পনাকে বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত' বলে প্রচার করাটা আদৌ নৈতিক নয়।

O

কারণ: আঠাশ

ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ কি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে শেখায়?


প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ধারক-বাহকরা, ধর্মীয়বেত্তারা, বুদ্ধিজীবী ধর্মগুরুরা অধুনা প্রচার শুরু করেছেন—প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে শেখায়। ধনী-দরিদ্রের বিভেদ ভুলিয়ে সকলকে একই গণউপাসনায়, গণপ্রার্থনায় মেলাতে পারে এবং মিলিয়ে থাকে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়।

 কিন্তু, এ তো কোনও কামা মিলন হতে পারে না! এ তো ধনী-দরিদ্রের বাস্তব বিভেদ মেটানোর কোনও পথ নয়! শোষক ও শোষিতের সম্পর্ক ভেঙে সাম্য প্রতিষ্ঠার কোনও দিশা নয়? এ তো অলীক বিশ্বাসের, ভ্রান্ত চেতনার ঐকা! অসাম্যের সমাজ কাঠামোকে টিকিয়ে রাখতে, শোষিতদের ক্ষোভকে বের করে দিতেই এই ঐক্য। শোষিতদের ক্ষোভকে বিস্ফোরিত হতে না দেওয়ার স্বার্থে ঐক্য। এই ঐক্য, এই আবেগময় ধর্মীয় গণজমায়েত প্রায়শই গণহিস্টিরিয়া তৈরি করে। এবং এ জাতীয় গণহিস্টিরিয়া ব্যক্তিমানুষের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা-সমাজ চেতনা-সামাজিক দায়িত্ববোধকে গুলিয়ে দেয়, ভুল পথে চালিত করে। শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় ঐক্য ধনী-দরিদ্র শ্রেণীর বৈষম্য বা অনৈক্যকে বাস্তবে টিকিয়ে

৫৯