পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এরপরও কেউ কেউ বলতে পারেন—মানব সংস্কৃতির অগ্রগমন শুধুমাত্র বস্তুগত উপাদানের উপর নির্ভর করে না। অবস্তুগত উপাদান, অর্থাৎ শিল্প-সাহিত-ভাস্কর্য-দর্শন ইত্যাদির অগ্রগমনের সঙ্গেও মানব প্রজাতির প্রগতি নির্ভরশীল। দর্শনের ক্ষেত্রে ভাববাদী দর্শন অধ্যাত্মবাদী দর্শন যে মহান মহাজ্ঞান মানব সংস্কৃতিকে দিয়েছে, তা কি অস্বীকার করা যায়?

 হ্যাঁ, স্বীকার করি অবতাররা মানব সংস্কৃতিকে দিয়েছে কিছু মহাজ্ঞান'। এই মহাজ্ঞানের মধ্যে রয়েছে অলীক বিশ্বাস, অলীক নিরাপত্তাবোধ, অলীক ইচ্ছাপূরণ, অলীক পরলোকে সুখভোগের নিশ্চিন্ত, অলীক পরজন্ম চিন্তা, অলীক মানুষে-মানুষে বিভাজন-রেখা, সব মিলিয়ে এক অলীক মহাজ্ঞান। এই অলীক মহাজ্ঞানের বাইরে এইসব অবতার, অধ্যাত্মবাদী নেতাদের কাছ থেকে আমরা কিছু পেয়েছি কি? উত্তর একটাই। না। অর্থাৎ ঈশ্বরদ্রষ্টা এইসব অবতার ও অধ্যাত্মবাদী নেতারা মানব প্রজাতির সংস্কৃতিকে দিয়েছে শুধুই অলীক ও ভ্রান্ত কিছু চিত্তা, যা শেষ পর্যন্ত মানষের দ্বারা মানুষকে শোষণের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তার মানে, এইসব ঈশ্বরদ্রষ্টা অবতার, অধ্যাত্মবাদী নেতারা মানব সংস্কৃতিতে মিশেল দিয়ে চলেছে খারাপ সংস্কৃতি, অপসংস্কৃতি।

O

ঈশ্বরদ্রষ্টা এইসব অবতার ও অধ্যাত্মবাদী নেতারা মানব প্রজাতির সংস্কৃতিকে দিয়েছে শুধুই অলীক ও ভ্রান্ত কিছু চিন্তা, যা শেষ পর্যন্ত মানষের দ্বারা মানুষকে শোষণের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

O

 ঈশ্বরদ্রষ্টারা আজ এক একটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মেরই প্রতীক হয়ে উঠেছে। তাই এমনটাই সঠিক মূল্যায়ন হবে, যদি আমরা বলি—ঈশ্বরদ্রষ্টাদের পাশাপাশি যে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মই যে সংস্কৃতিকে সৃষ্টি করেছে এবং পালন ও পুষ্ট করে চলেছে, তা হল, অলীক বিশ্বাস, যুক্তিহীনতা, মানবতাহীনতা ও ভক্তির সংস্কৃতি, মানব সভ্যতাকে পশ্চাৎমুখী করার সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি কোনও ভাবেই যুক্তি-বুদ্ধি ও মানবতার কোনও সংস্কৃতি নয়। এই সংস্কৃতি মানব প্রজাতির অগ্রগমনের কোনও সংস্কৃতি নয়।


কারণ: একত্রিশ

রামকৃষ্ণ ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা অনেকেই ঈশ্বরকে দেখেছেন বলে শোনা যায়, তাঁরা নিজেরাও বলেছেন। সে সবই কি তবে বানানো, মিথ্যে?

'৮৬-র ফেব্রুয়ারি। স্থান-আগরতলা প্রেস ক্লাব। সময়—বিকেল। প্রেস কনফারেন্সের আয়োজক—আগরতলা প্রেস ক্লাব। উপলক্ষ—বইমেলা উপলক্ষে

৬৪