পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কালী। বাংলা ১৩৭১ সালে মূর্তি প্রতিষ্ঠা। তার আগে একটি ছোট্ট বেড়া দেওয়া ঘরে পুজো হতো। তখনই 'মা'-এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল এখানে ওখানে।

 মন্দিরে যিনি পুজো করেন, তাঁর বয়স ষাটের কোঠায়। শীর্ণকায়! বিধবা, কিছুদিন হলো স্বামী-বিয়োগ হয়েছে। ভক্তদের দেওয়া অর্থেই সংসার চলে। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার পুজোয় বসার পর মায়ের ভর হয়। তখন 'মা'-কে যে প্রশ্ন করা যায়, 'মা' তার উত্তর দেন। প্রশ্ন করার জন্য কুড়ি পয়সা দক্ষিণা। পুজোয় বসার কিছুক্ষণ পর মায়ের মাথা দুলতে থাকে। কাঁসর-ঘণ্টার আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের মাথার দোলাও ক্রমশ বাড়তে থাকে। তারপর একসময়ে 'মা'য়ের হাত থেকে ফুল খসে পড়ে, ঘণ্টা স্ফলিত হয়। মা আচ্ছন্ন হয়ে যান। ভর হয়। ভক্তরা তখন প্রশ্ন করতে শুরু করেন। 'মা' আচ্ছন্ন অবস্থায় উত্তর দিয়ে থাকেন।

 এবং উত্তর মিলেও যায়। রোগভোগ সেরে যায়। মানুষগুলির ভিড় তাই বাড়ে।


 প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষদের মধ্যে এক তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। এই প্রসঙ্গ নিয়ে প্রচুর চিঠি পেয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর মানুষের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি। প্রশ্নগুলো এই ধরনের “আপনারা কি ঈশ্বরের ভরে পাওয়া পূজারিণীর মুখোমুখি হবেন? না কি, তুড়ি দিয়েই প্রতিবেদকের বক্তব্যকে উড়িয়ে দিতে চাইবেন?”

 ঈশ্বরে ভর আর ভূতে ভরের প্রশ্নে আজও বহু মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত। আমার পরিচিত এক প্রাক্তন অধ্যাপক গোবিন্দ ঘোষ তুকতাক, ঝাড়-ফুক, জ্যোতিষ এই সব কিছুকেও বুজরুকি বলে উড়িয়ে দিয়েও উড়িয়ে দিতে পারেননি ভরকে। কারণ এ'যে নিজের চোখে দেখা।

 আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির উত্তর যথারীতি দিয়েছিলাম। ৩ জুলাই ৯০ চিঠিটি প্রকাশিত হয়েছিল। ভর নিয়ে বিস্তৃত আলোচনায় ঢোকার আগে মুখবন্ধ হিসেবে প্রকাশিত চিঠিটায়, আমরা একবার চোখ বুলিয়ে নিই আসুনঃ


পূজারিণীর শরীরে দেবতার ভর?

 সাবর্ণী দাশগুপ্তের 'পূজারিণীর শরীর বেয়ে' প্রতিবেদনটি (৩০ মে) পড়ে অবাক হয়ে গেছি। লেখাটি পড়ে বিশ্বাস করার সঙ্গত কারণ রয়েছে যে, সাবর্ণী দাশগুপ্তের 'ভর' হওয়ার বিজ্ঞানসম্মত কারণগুলি বিষয়ে অবহিত নন এবং উনি ভরগ্রস্তদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। অবশ্য তিনি যদি তাঁর লেখার সত্যতা

৭৫