পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যায় সেই মত ব্যবস্থা নেবার। সেই পাহারাদার গাড়ির লোকজনও ছিল ওপাশের ঘরে। তাদেরই একজনকে ডেকে পটল ইশারায় কি জানিয়ে দিতে সেও দলবল নিয়ে বের হয়ে গেল। রাতের অন্ধকারে এ সব কাজ করা তাদের অভ্যাস আছে। এতটুকু বুক কঁপে না তাদের। বসন্তবাবু বাড়ি ফিরছেন। অন্ধকারে গাড়িটা চলেছে জোরালো হেডলাইট জেলে। পথটা এখানে নির্জন। গাড়ির ভিড় নেই। রেললাইন এর চড়াই ঠেলে গাড়িটাকে উঠতে হয়, দু’পাশে ঘন গাছ গাছালির অন্ধকার আলোর প্রবেশপথ রাখে নি, হঠাৎ এমনি সময় ওই ছায়ামূর্তির দল গাড়ির সামনে এসে দাঁড়াতেই ব্রেক করেছে ড্রাইভার ওদের কাছে বাধা পেয়ে । তখুনিই ওরা দরজা খুলে ঠেলে বের করে ফেলে পিছনের সিট থেকে বুড়ো মানুষটাকে। আর্তনাদ করে ওঠেন বসস্তবাবু মেরো না মেরো না বাবা। আবছা অন্ধকারে ঠাওর হয় না। ওই ছায়ামূর্তিদের। ওদের হাতে রয়েছে ধারালো ছোরা একফালি আলোয় ঝকঝকিয়ে ওঠে। কে গর্জে ওঠে চােপ বে। বসস্তবাবু আর্তনাদ করে ওঠেন—মেরো না আমাকে, আমি তোমাদের কি করেছি ? ওদিকে সাবিত্রীও বাড়ি ফিরছিল। সাবিত্রী যেন স্বপ্ন দেখছে। আবছা অন্ধকারে সে কিছুই ঠাওর করতে পারে না। কোথায় যেন একটা সাংঘাতিক কান্ড ঘটতে চলেছে। ওই আর্তকণ্ঠস্বর শুনে শিউরে উঠেছে সাবিত্রী। এই কণ্ঠস্বর তার চেনা। সেও চীৎকার করে ওঠে। --বাবা! বাবা! সব, ভুলে সাবিত্রী এগিয়ে যায়। সাবিত্রী অন্ধকারে ওই আর্তকণ্ঠস্বর লক্ষ্য করে ছুটিতে থাকে। আক্রমণকারীর দল চমকে উঠেছে। কে যেন এগিয়ে আসছে এইদিকে। গাড়ির হেডলাইট নেভানো। অন্ধকারের দৈত্যগুলো মরীয়া হয়ে ওঠে, ওদের হাতে সময় নেই, এখুনিই কাজ শেষ করে সরে পড়তে হবে। তাই দেৱী না করে তারা বসন্তবাবুর উপর চরম আঘাত হানে, ছিটকে পড়ে ওর দেহটা প্রচন্ড নির্মম আঘাতে । সাবিত্রী এগিয়ে আসছে ও ডাকতে থাকে। S8 by