পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবলা ডেকে বলে, আরেকটু গলা চড়িয়ে বল তো কেশব । তোরা কেউ টু শব্দ করবি নে, মেরে ফেলব। মেরে ফেলবে । ছেলেমেয়ে ঘর সংসার সবই অবশ্য অবলার। পক্ষাঘাতে আৰ্দ্ধেকটা দেহ অবশ হয়ে সে আজ কয়েক বছর বিছানায় পড়ে আছে। সে বিছানা নিয়েছিল বলে মায়া এসে জায়ের সংসার ঘাড়ে নেয় নি। অবলার রোগটা হয় মায়া এখানে আশ্রয় নিতে আসার কয়েক মাস পরে । কেউ কেউ তখন বড় ভয়ানক ইঙ্গিত করেছিল। কবিরাজের মেয়ে, কত তুকতাক ওষুধ পত্র জানে। অবল উঠে চলে ফিরে বেড়াতে পারলে তাকে দাসী হয়ে থাকতে হয় জায়ের । কে জানে অবলার রোগটা সে-ই ঘটিয়েছে কিনা । নইলে সুস্থ সবল মানুষটা খায় দায় হেঁটে বেড়ায় কাজ কর্ম্ম করে, এমন হঠাৎ কেন অৰ্দ্ধেক অঙ্গ তার্ন অবশ হয়ে যাবে ? কিন্তু লোকে কাণে তোলে নি সে ইঙ্গিত । অন্যকে কঁাদিতে দেখলে যে না কেঁদে পারে না, নিজেকে ভুলে সকলের এমন প্রাণপাত সেবা যত্ন যে করে যায় দিনের পর দিন, সকলের জন্য যার বুকভরা দরদের শত শত পরিচয় নিত্যই পাওয়া যায়, নিজের স্বার্থে সে কখনো পক্ষাঘাত ঘটাতে পারে একটা মানুষের । জোরে জোরে কেশব দুর্ঘটনার কাহিনী বলে যায়। বড় বড় চোখ মেলে তার মুখের দিকে চেয়ে মায়া যেন গিলতে থাকে তার কথাগুলি। বাড়ী ফেরার সময় আরও যেন ওজন বেড়েছে মনে হয়। সারাদিনের বিষাদ অবসাদ আর ভয়ের । এবার যেন কষ্ট হচ্ছে বেশী। রাত বেশী হয় নি। কিন্তু বোসপাড়ার ভিতরের দিকে এই গলি-রাস্তায়। লোক চলাচল কমে গেছে। নীড়ে নীড়ে জীবনকে গুটিয়ে নিয়েছে মানুষ Wu) vess