রাণী ভবানী । বাণী ভবানী এই সংবাদ শুনিয়া যারপরনাই ভীত হইলেন । তিনি প্রায় অৰ্দ্ধবঙ্গের অধীশ্বৰী,-চরিত্রের দৃঢ়তায়, তেজস্বিতায়, শাসন শক্তিতে এবং অসংখ্য সৎকর্ম্মে বাঙ্গালার জমিদার ও জনসাধারণ সকলেরই পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধার পাত্রী। সিরাজ তাহার কন্যাকে হরণ করিবার চেষ্টা করিলে যে, বাঙ্গালাময় বোষ ও অসন্তোষের আগুন জুলিয়া উঠিবে, তাহাও তিনি জানিতেন। কিন্তু তবু তিনি ভীত হইলেন। কারণ, তিনি জানিতেন, ইন্দ্রিয়ালালসায় উন্মত্ত সিরাজ, ভবিষ্যতে আপন কর্ম্মের ফল গণিতে অক্ষম । শেষে ফল কি হইবে, ইহা ভাবিয়া সিরাজ লালসা দমন কবিবেন না, করিতে পারিবেন না । সিরাজের কায্যে বাধা দেওয়া স্নেহে দুৰ্বল আলিবর্দীর ক্ষমতাতীত। এদিকে বলপূর্বক তারাকে হরণ করিবার জন্য সিরাজের সৈন্য আসিয়া বড়নগর আক্রমণ করিল। নিকটে রাণী ভবানীর অর্থে প্রতিপালিত সন্ন্যাসীদের একটি আশ্রম ছিল। ভবানী তাহাদের আশ্রয় প্রার্থনা করিলেন । প্রতিপালিকার সম্মান রক্ষার জন্য সন্ন্যাসীঠাকুররা ঢাল তরোয়ালে সাজিয়া আসিলেন। সিরাজের সৈন্য পরাজিত হইয়া ফিরিয়া গেল। ইহাতে যে সিরাজ নিরস্তু হইবেন। এরূপ আশা করা যাইতে পারে না। কৌশলে সিরাজকে প্রতারিত করিয়া কিছুকালের নিমিত্ত অবসর পাইবার জন্য, হিতৈষীগণের পরামর্শে রাত্রিতে গঙ্গাতীরে মিথ্যা চিন্তা জ্বালাইয়া রাণী ভবানী প্রচার করিলেন
পাতা:আর্য্য-নারী দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৩০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।