এখন তো তুমি রাজেশ্বর হইলে। মূঢ়ের শোক নামমাত্র—যে ব্যক্তি পরমপদার্থ পিতা মাতাকে কখন সুখ দেয় নাই,—নানাপ্রকার যন্ত্রণা দিত, তাহার মনে পিতার শোক কিরূপে লাগিবে? যদি লাগে তবে তাহা ছায়ার ন্যায় ক্ষণেক স্থায়ী তাহাতে তাহার পিতাকে কখন ভক্তি পূর্ব্বক স্মরণ করা হয় না ও স্মরণার্থে কোনো কর্ম্ম করিতে মনও চায় না। মতিলালের বাপের শোক শীঘ্র ঢাকা পড়িয়া বিষয়-আশয় কি আছে কি না আছে তাহা জানিবার ইচ্ছা প্রবল হইল। সঙ্গিদিগের বুদ্ধিতে ঘর দ্বার সিন্দুক পেটারার ডবল্২ তালা দিয়া স্থির হইয়া বসিল। সর্ব্বদা মনের মধ্যে এই ভয়, পাছে মায়ের কি বিমাতার কি ভাইয়ের বা ভগিনীর হাতে কোন রকমে টাকা কড়ি পড়ে তাহা হইলে সে টাকা একেবারে গাপ হইবে। সঙ্গিরা সর্ব্বদা বলে —বড়বাবু! টাকা বড় চিজ —টাকাতে বাপকেও বিশ্বাস নাই। ছোটবাবু ধর্ম্মের ছালা বেঁধে সত্য২ বলিয়ে বেড়ান বটে কিন্তু পতনে পেলে তাঁহার গুরুও কাহাকে রেয়াত করেন না —ও সকল ভণ্ডামী আমরা অনেক দেখিয়াছি —সে যাহা হউক, বরদা বাবুটা অবশ্য কোন ভেল্কি জানে —বোধ হয় ওটা কামাখ্যাতে দিনকতক ছিল, তা না হলে কর্ত্তার মৃত্যুকালে তাঁহার এত পেশ কি প্রকারে হইল।
দুই-এক দিবস পরেই মতিলাল আত্মীয় কুটুম্বদিগের নিকট লৌকতা রাখিতে যাইতে আরম্ভ করিল। যে সকল লোক দলঘাঁটা, সাল্কে মধ্যস্থ করিতে সর্ব্বদা উদ্যত হয়, জিলাপির ফেরে চলে, তাহারা ঘুরিয়া ফিরিয়া নানা কথা বলে —সে সকল কথা আসমানে উড়ে২ বেড়ায়, জমিতে ছোঁয়২ করিয়া ছোঁয় না সুতরাং উল্টে পাল্টে লইলে তাহার দুই রকম অর্থ হইতে পারে। কেহ২ বলে কর্ত্তা