পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১২৯ ]

ইহার আশ্চর্য্য কি? —ভাত ছড়ালে কাকের অভাব নাই, আর গুড়ের গন্ধেই পিঁপড়ার পাল পিল্২ করিয়া আইসে। একদিন বক্রেশ্বরের সাইতের পন্থায় আসিয়া মতিলালের মনযোগান কথা অনেক বলিল কিন্তু বক্রেশ্বরের ফন্দি মতিলাল বাল্যকালাবধি ভাল জানিত —এই জন্যে তাহাকে এই জবাব দেওয়া হইল —মহাশয়! আমার প্রতি যেরূপ তদারক করিয়াছিলেন তাহাতে আমার পরকালের দফা একেবারে খাইয়া দিয়াছেন —ছেলেবেলা আপনাকে দিতে থুতে আমি কসুর করি নাই —এখন আর যন্ত্রণা কেন দেন? বক্রেশ্বর অধোমুখে মেও মেও করিয়া প্রস্থান করিল। মতিলাল আপন সুখে মত্ত —বাঞ্ছারাম ও ঠকচাচা এক একবার আসিতেন কিন্তু তাহাদিগের সঙ্গে বড় দেখাশুনা হইত না —তাঁহারা মোক্তারনামার দ্বারা সকল আদায়-ওয়াশিল করিতেন ও মধ্যে২ বাবুকে হাততোলা রকমে কিছু২ দিতেন। আর ব্যয়ের কিছু নিকেশ প্রকাশ নাই —পরিবারেরও দেখা শুনা নাই —কে কোথায় থাকে —কে কোথায় খায় —কিছুই খোঁজ খবর নাই —এইরূপ হওয়াতে পরিবারদিগের ক্লেশ হইতে লাগিল কিন্তু মতিলাল বাবুয়ানায় এমত বেহোস যে এসব কথা শুনিয়েও শুনে না।

 সাধ্বী স্ত্রীর পতিশোকের অপেক্ষা আর যন্ত্রণা নাই। যদ্যপি সৎ সন্তান থাকে তবে সে শোকের কিঞ্চাৎ শমতা হয়। কুসন্তান হইলে সেই শোকানলে যে ঘৃত পড়ে। মতিলালের কুব্যবহার জন্য তাহার মাতা ঘোরতর তাপিত হইতে লাগিলেন —কিন্তু মুখে কিছুই প্রকাশ করিতেন না, তিনি অনেক বিবেচনা করিয়া একদিন মতিলালের নিকট আসিয়া বলিলেন —বাবা! আমার কপালে যাহা ছিল তাহা হইয়াছে এক্ষণে যে ক দিন বাঁচি