পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৪৩ ]

কর্ম্মে কখনই বিরত হয় নাই, তাহার যদি এরূপ না হবে তবে আর ধর্ম্মাধর্ম্ম কি?

 কর্ম্মক্রমে প্রেমনারায়ণ মজুমদার পরদিন বৈদ্যবাটীর ঘাটে স্নান করিতেছিল —তর্কসিদ্ধান্তকে দেখিয়া বলিল —মহাশয় শুনেছেন —বিট্‌লেরা সর্ব্বস্ব খুয়াইয়া ওয়ারিণের ভয়ে আবার এখানে পালিয়ে আসিয়াছে —কালামুখ দেখাইতে লজ্জা হয় না। বাবুরাম ভাল মুষলং কুলনাশনং রাখিয়া গিয়াছেন! তর্কসিদ্ধান্ত কহিলেন —ছোঁড়াদের না থাকতে গ্রামটা জুড়িয়ে ছিল —আবার ফিরে এল? আহা! মা গঙ্গা একটু কৃপা করলে যে আমরা বেঁচে যাইতাম। অন্যান্য অনেক ব্রাহ্মণ স্নান করিতেছিলেন—নববাবুদিগের প্রত্যাগমনের সংবাদ শুনিয়া তাঁহাদিগের দাঁতে২ লেগে গেল, ভাবিতে লাগিলেন যে আমাদিগের স্নান-আহ্ণিক বুঝি অদ্যাবধি শ্রীকৃষ্ণায় অর্পণ করিতে হইবে। দোকানি পসারিরা ঘাটের দিকে দেখিয়া বলিল —কই গো। আমরা শুনিয়াছিলাম যে মতিবাবু সাত সুলুক ধন লইয়া দামামা বাজিয়ে উঠিবেন—এমন সুলুক দূরে যাউক একখানা জেলে ডিঙিও যে দেখতে পাই না। প্রেমনারায়ণ বলিল —তোমরা ব্যস্ত হইও না —মতিবাবু কমলে কামিনীর মুস্‌কিলের দরুণ দক্ষিণ মশান প্রাপ্ত হইয়াছেন —বাবু অতি ধর্ম্মশীল —ভগবতীর বরপুত্র —ডিঙ্গে সুলুক ও জাহাজ ত্বরায় দেখা দিবে আর তোমরা মুড়ি কড়াই ভাজিতে ভাজিতেই দামামার শব্দ শুনিবে।