বলিল —সেই বাঙ্গাল বাবু আসিতেছেন। বেণী বাবু উঠিয়া দেখিলেন বরদাপ্রসাদ বাবু ছড়ি হাতে করিয়া ব্যস্ত হইয়া আসিতেছেন —অমনি বেণীবাবু ও বেচারাম বাবু উঠিয়া অভ্যর্থনা করিয়া তাঁহাকে বসাইলেন —পরস্পরের কুশল জিজ্ঞাসা হইলে পর বরদাবাবু বলিলেন —এদিকে তো যা হবার তা হইয়া গেল সম্প্রতি আমার একটি নিবেদন আছে —বৈদ্যবাটীতে আমি বহুকালাবধি আছি—একারণ সাধ্যানুসারে সেখানকার লোকদিগের তত্ত্ব লওয়া আমার কর্ত্তব্য —আমার অধিক ধন নাই বটে কিন্তু আমি যেমন মানুষ বিবেচনা করলে পরমেশ্বর আমাকে অনেক দিয়াছেন, আমি অধিক আশা করিলে কেবল তাঁহার সুবিচারের উপর দোষারোপ করা হয় —এ কর্ম্ম মানবগণের উচিত নহে। যদিও প্রতিবেশীদের তত্ত্ব লওয়া আমার কর্ত্তব্য কিন্তু আমার আলস্য ও দুরদৃষ্ট বশতঃ ঐ কর্ম্ম আমা হইতে সম্যক্ রূপে নির্ব্বাহ হয় নাই। এক্ষণে—
বেচারাম। এ কেমন কথা! বৈদ্যবাটীর যাবতীয় দুঃখি প্রাণি লোককে তুমি নানা প্রকারে সাহায্য করিয়াছ —কি খাদ্য দ্রব্যে —কি বস্ত্রে —কি অর্থে —কি ঔষধে —কি পুস্তকে —কি পরামর্শে —কি পরিশ্রমে, কোন অংশ ক্রটি করো নাই। ভায়া! তোমার গুণকীর্ত্তনে তাহাদিগের অশ্রুপাত হয় —আমি এ সব ভাল জানি —আমার নিকট ভাঁড়াও কেন?
বরদা। আজ্ঞে না ভাঁড়াই নাই —মহাশয়কে স্বরূপ বলিতেছি, আমা হইতে কাহারো যদি সাহায্য হইয়া থাকে তাহা এত অল্প যে স্মরণ করিলে মনের মধ্যে ধিৎকার জন্মে। সে যাহউক, এখন আমার নিবেদন এই মতিলালের ও ঠকচাচার পরিবারেরা অন্নাভাবে মারা যায় —শুনিতে পাই