পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৭৯ ]

অনেকক্ষণ পরে আপনার উরূর উপর করাঘাত করিয়া আপনা আপনি বলিলেন —এই তো দিব্য রোজগারের পথ দেখিতেছি —বাবুরামের চিনেবাজারের জায়গা ও ভদ্রাসন বাটী বন্ধক আছে, তাহার মেয়াদ শেষ হইয়াছে —হেরম্ব বাবুকে বলিয়া আদালতে একটা নালিশ উপস্থিত করাই, তাহা হইলেই কিছুদিনের জন্যে ক্ষুণ্ণিবৃত্তি হইতে পারিবে, এই বলিয়া চাদরখানা কাঁধে দিলেন এবং গঙ্গা দর্শন করিয়া আসি বলিয়া জুতা ফটাস্‌ ফটাস্‌ করিয়া মন্ত্রের সাধন কি শরীর পতন, এইরূপ স্থির ভাবে হেরম্ববাবুর বাটীতে গিয়া উপস্থিত হইলেন। দ্বারে প্রবেশ করিয়াই চাকরকে জিজ্ঞাসা করিলেন —কর্ত্তা কোথা রে! বাঞ্ছারামের স্বর শুনিয়া হেরম্ব বাবু অম্‌নি নামিয়া আসিলেন —হেরম্ব বাবু— সাদা সিদে লোক —সকল কথাতেই “হ্যাঁ” বলিয়া উত্তর দেন। বাঞ্ছারাম তাঁহার হাত ধরিয়া অতিশয় প্রণয়ভাবে বলিলেন —চৌধুরী মহাশয়! বাবুরামকে আপনি আমার কথায় টাকা কর্জ্জ দেন —তাহার সংসার ও বিষয় আশয় ছারখার হইয়া গেল —মান সম্ভ্রমও তাহার সঙ্গে গিয়াছে —বড় ছেলেটা বানর—ছোটটা পাগল, দুটই নিরুদ্দেশ হইয়াছে, এক্ষণে দেনা অনেক —অন্যান্য পাওনাওয়ালারা নালিশ করিতে উদ্যত —পরে নানা উৎপাত বাধিতে পারে অতএব আপনাকে আর আমি চুপ করিয়া থাকিতে বলিতে পারি না —আপনি মারগেজি কাগজগুলা দিউন —কালিই আমাদের আফিসে নালিসটি দাগিয়া দিতে হইবেক —আপনি কেবল একখানা ওকালতনামা সহি করিয়া দিবেন। পাছে টাকা ডুবে এই ভয় এ অবস্থায় সকলেরই হইয়া থাকে —হেরম্ব বাবু খল কপট নহেন, সুতরাং বাঞ্ছারামের উক্ত কথা তাঁহার মনে একেবারে চৌচাপটে লেগে গেল, অম্‌নি