পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৯৭ ]

সঙ্গে করিয়া আনিলেন। মুঙ্গেরের নিকট রজনীযোগে নৌকা চাপা হইলে চৌয়াড়ের মতো আকৃতি একজন লোক ঘনিয়া২ কাছে আসিয়া “আগুন আছে —আগুন আছে” বলিয়া উঁচু হইয়া দেখিতে লাগিল। তাহার রকম-সকম দেখিয়া বরদা বাবু বলিলেন —সকলে সতর্ক হও, তদনন্তর নৌকার ছাতের উপর উঠিয়া দেখিলেন একটা ঝোপের ভিতরে প্রায় বিশ —ত্রিশজন অস্ত্রধারী লোক ঘাপ্টি মারিয়া বসিয়া আছে —ঐ ব্যক্তি সংকেত করিলে চড়াও হইবে। অমনি রামলাল ও বরদা বাবু বাহির হইয়া বন্দুক লইয়া আওয়াজ করিতে লাগিলেন, বন্দুকের আওয়াজে ডাকাইতেরা বনের ভিতর প্রবেশ করিল। বরদা ও রামলালের মানস যে তলওয়ার হাতে লইয়া তাহাদিগের পশ্চাৎ২ গিয়া দুই একজনকে ধরিয়া আনিয়া নিকটস্থ দারোগার জিম্মা করিয়া দেন কিন্তু পরিবারেরা সকলে নিষেধ করিল। মতিলাল এই ব্যাপার দেখিয়া বলিল —আমার বাল্যাবস্থা অবধি সর্ব্ব প্রকারেই কুশিক্ষা হইয়াছে —আমার বাবুয়ানাতেই সর্ব্বনাশ হইয়াছে। রামলাল কসলৎ করিত তাহাতে আমি পরিহাস করিতাম —কিন্তু আজ জানিলাম যে বালককালাবধি মর্দানা কসলৎ না করিলে সাহস হয় না। সম্প্রতি আমার অতিশয় ভয় হইয়াছিল, যদ্যপি রামলাল ও বরদা বাবু না থাকিতেন তবে আমরা সকলেই কাটা যাইতাম।

 অল্পকালের মধ্যে সকলে বৈদ্যবাটীতে পৌঁহুছিয়া বরদা বাবুর বাটীতে উঠিলেন। বরদা বাবু ও রামলালের প্রত্যাগমনের সংবাদ শুনিয়া গ্রামস্থ যাবতীয় লোক চতুর্দ্দিক্ থেকে দেখা করিতে আসিল —সকলেরই মনে আনন্দের উদয় হইল —সকলেরই বদন আহ্লাদে দেদীপ্যমান হইল