পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৯ ]

অথবা ক্রমাগত পড়াশুনা করা ভালো নহে। খেলাধুলা করিবার বিশেষ তাৎর্পযয় এই যে, শরীর তাজা হইয়া উঠিলে তাহাতে পড়াশুনা করিতে অধিক মন যায়। ক্রমাগত পড়াশুনা করিলে মন দুর্ব্বল হইয়া পড়ে—যাহা শেখা যায় তাহা মনে ভেসে ভেসে থাকে— ভালো করিয়া প্রবেশ করে না। কিন্তু খেলারও হিসাব আছে, যে২ খেলায় শারীরিক পরিশ্রম হয়, সেই খেলাই উপকারক। তাস পাশা প্রভৃতিতে কিছুমাত্র ফল নাই—তাহাতে কেবল আলস্য স্বভাব বাড়ে—সেই আলস্যেতে নানা উৎপাত ঘটে। যেমন ক্রমাগত পড়াশুনা করিলে পড়াশুনা ভালো হয় না, তেমন ক্রমাগত খেলাতেও বুদ্ধি হোঁতকা হয় কেননা খেলায় কেবল শরীর সবল হইতে থাকে—মনের কিছুমাত্র শাসন হয় না, কিন্তু মন একটা না একটা বিষয় লইয়া অবশ্যই নিযুক্ত থকিবে, এমন অবস্থায় তাহা কি কুপথে বই সুপথে যাইতে পারে? অনেক বালক এইরূপেই অধঃপাতে গিয়া থাকে।

 হলধর, গদাধর ও মতিলাল গোকুলের ষাঁড়ের ন্যায় বেড়ায়— যাহা মনে যায় তাই করে— কাহারো কথা শুনে না— কাহাকেও মানে না। হয় তাস—নয় পাশা— নয় ঘুড়ি—পায়রা—নয় বুলবুল, একটা না একটা লইয়া সর্ব্বদা আমোদেই আছে—খাবার অবকাশ নাই—শোবার অবকাশ নাই—বাটীর ভিতর যাইবার জন্য চাকর ডাকিতে আসিলে, অমনি বলে—যা বেটা যা, আমরা যাব না। দাসী আসিয়া বলে, অগো মা-ঠাকুরানী যে শুতে পান্ না—তাহাকেও বলে—দূর হ হারামজাদি! দাসী মধ্যে মধ্যে বলে, আ মরি, কী মিষ্ট কথাই শিখেছ! ক্রমে ক্রমে পাড়ার যত হতভাগা লক্ষ্মীছাড়া—উনপাজুরে—বরাখুরে ছোঁড়ারা জুটিতে আরম্ভ হইল। দিবারাত্রি হট্রগোল—বৈঠকখানায় কাণ পাতা ভার—কেবল হো২ শব্দ— হাসির গর্‌রা ও তামাক-চরস গাঁজার ছর্‌রা, ধোঁয়াতে অন্ধকার হইতে লাগিল। কার