পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
আলোর ফুলকি

তখন কুঁকড়োকে বুঝিয়ে দিলেন, “ভোর পাঁচটায় বাগানে মালী তো থাকে না, তাই বিকেল ৫টা না করে সকাল ৫টাই ঠিক হয়েছে।”

 “এ কী বিপরীত কাও।” বলে কুঁকড়ে ‘হো হো' করে হেসে উঠলেন। চড়াই অমনি বলে উঠল, “বিপরীত বলে বিপরীত।” জিন্মা তাকে ধমকে বললে, “তোমার আর খোশামুদিতে কাজ নেই, তুমি নিজে তো কোনো সোমবারে পার্টিগুলো কামাই দাও না দেখি।”

 চড়াই উত্তর করলে, “সত্যি যাই বটে, সবাই আমাকে খাতির করে কিনা।”

 জিম্মা গজগজ করে খানিক কী বকে গেল। জিন্মা কী বকছে শুধোলে কুঁকড়োকে সে জবাব দিলে, “কোনদিন হয়তো তোমাকেও কোন্‌ -এক মুরগি এই পার্টিতে নিয়ে হাজির করেছে, দেখব।”

 কুঁকড়ো হেসে বললেন, “আমাকে হাজির করে দেবে, চা-পার্টিতে, কোনো এক মুরগি।”

 জিন্মা বললে, “হাঁ মশায়, এমনি হাজির করা নয়, মাথার ঝুঁটিটি ধরে টানতে টানতে না হাজির করে।”

 কুঁকড়ো একটু চটেই জিন্মাকে বললেন, “এ সন্দেহটা তোমার করবার কারণটি কী।”

 জিন্মা জবাব দিলে, “কারণ নতুন মুরগির দেখা পেলে মশায়ের মাথা সহজেই ঘুরে যায় এখনো।”

 চড়াই বলে উঠল, “জিন্মা-দি ঠিক বলেছে, নতুন মুরগি যেমন দেখা, অমনি কুঁকড়ো-মশায় এমনি করে ঘাড় বেঁকিয়ে বেঁকিয়ে 'কুক কুক’ বলে নৃত্য করতে থাকেন, মুরগিটির চারি দিকে।” বলে চড়াইটা একবার কুঁকড়োর চলনবলন হুবহু দেখিয়ে দিলে।

 কুঁকড়ো হেসে বললেন, “আচ্ছা বেকুফ পাখি যাহোক।”

 চড়াইটা তখনো ডান কাঁপিয়ে লেজ তুলিয়ে কুঁকড়োর মতো তালে তালে পা ফেলে মোরগ মুরগির নকল দেখাচ্ছে, ঠিক সেই সময় ওদিকে হম করে বন্দুকের আওয়াজ হল। চড়াই অমনি কাঠের পুতুলের মতো এক পা তুলেই দাঁড়িয়ে গেল। কুঁকড়ো গলা উঁচু ক'রে, আর কুকুর কান খাড় ক’রে নাক ফুলিয়ে শুনতে লাগল। আর-এক গুলির আওয়াজ। চড়াইট গিয়ে মুরগি-গিরির ভাঙা পেটরার আড়ালে লুকিয়েছে, এমন সময় উহু-উ-উ-উ বলতে