পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আলোর ফুলকি
২৭

আবদারে তুমি অমন ‘না করলে যে।”

 কুঁকড়ে একটু গললেন। “আমি তা—” তার পর খুব শক্ত হয়ে বললেন, “ন, কিছুতেই যাব না। রাত হল,” বলে কুঁকড়ো অন্য দিকে চাইলেন। মোনালি একটু বিরক্ত হয়ে কুকুরের বাক্সতে গিয়ে সেঁধলেন।

 রাত্রির নীল অন্ধকার ক্রমে ঘনিয়ে এসেছে। একে-একে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। জিন্ম ঘরের দাওয়ায় পা ছড়িয়ে শুয়েছে। চিনি-দিদি ঘুমের ঘোরে এক-একবার বকতে লেগেছে, “৫টা থেকে ৬টা।” তাল-চড়াইট তার খাচার এককোণে গুটিমুটি হয়ে ঘুম `ಿ তখনে মটকার উপরে খাড়া দাড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন আর চারি দিক চেয়ে দেখছেন। একটা দুষ্ট বাচ্ছা রাতের বেলায় চুপি চুপি উঠোনে বার হয়েছে দেখে কুঁকড়ে তাকে এক ধমক দিয়ে তাড়িয়ে ঘরে ঢুকিয়ে দিলেন। তার পর আস্তে আস্তে সোনালির বাক্সটার কাছে গিয়ে কুঁকড়ে বললেন, “মোন।” ঘুম ঘুম স্বরে সোনালিয়া উত্তর দিলে, “কী।” কুঁকড়ে একবার বললেন, “না।” তার পর আবার নিশ্বেস ছেড়ে বললেন, “না, কিছু নয়।” বলে কুঁকড়ে মই বেয়ে উপরে চলে গেলেন। উপরে গিয়ে কুঁকড়ে একবার ডাক দিলেন, “রাত, ভারী রাত।” তার পর কুঁকড়ে সে রাতের মতো চোখ বুজলেন খোপে ঢুকে।

  চারি দিক নিশুতি হল আর অমনি কালো বেড়ালের সবুজ চোখদুটো অন্ধকারে ঝকঝক করে উঠল। অমনি ভোদড় বললে, “আমিও তবে চোখ খুলি।” ভাম বললে, “আমিও।” দুজোড়া চোখ ছাদের আলসেতে জলজল করে ঘুরতে লাগল। ছুচে ইছর আর বাছড় তিনজনেই বললে, “আমরাও তবে চোখ খুললেম।” কিন্তু এদের চোখ এত ছোটো যে খুলল কি না বোঝা গেল না, কেবল তাদের চিক চিক আওয়াজ শোনা গেল। একটু পরেই অন্ধকার থেকে তিনটে পেচা আগুনের মতো তিন জোড়া চোখ খুলে মুট করে দেখা দিলে। তখন সবুজ হলদে লাল— সব চোখ এ ওর দিকে চাওয়া-চাওয়ি করতে থাকল আর বলাবলি করতে লাগল, “আছ তো? এসেছ? আছ তো, এ এ এ্য।” বেড়াল পেচাকে শুধল, “আছ তো।” পেচা ভোঁদড়কে, ভোদড় বাদুড়কে, এমনি সবাই সবাইকে শুধলে, “আছ তো। ঠিক আছ তো। ঠিক আজকে তো। আসছ তো ঠিক।” বেড়াল শুধলে, “আজই