দূর থেকে কাছ থেকে কী-সব শব্দ আসছে। সে পাহাড় থেকে মুখ ঝুঁকিয়ে চারি দিক চাইতে লাগল। কুঁকড়ো চুপটি করে চোখ বুজে বসে বললেন, “কী শুনছ সোনালিয়া, বলো।”
সোনালিয়া বলে চলল, “আকাশের গায়ে কে যেন কাসর পিটছে।”
কুঁকড়ো বললেন, “দেবতার আরতি বাজছে।”
সোনালি বললে, “এবার যেন শুনছি মানুষদের আরতির বাজনা টং টং”
কুঁকড়ো বললেন, “কামারের হাতুড়ি পড়ছে।”
সোনালি, “এবার শুনছি গোরু সব হামা দিয়ে ডাকছে আর মানুষে গান ছেড়েছে।”
কুঁকড়ো, “হাল গোরু নিয়ে চাষা চলেছে।”
সোনালি এবার বললে, “কাদের বাসা থেকে বাচ্ছাগুলো সব রাস্তার মাঝে চলকে পড়ে কিচমিচ করে ছুটছে।”
কুঁকড়ো বলে উঠলেন, “পাঠশালার পোড়োর চলল”, ব’লে কুঁকড়ে সোজা হয়ে বসলেন। সোনালি আবার বললে, “পিপড়ের মতো করা সাদা হাত-পা-ওয়ালা কাদের সব ধরে ধরে আছাড় দিচ্ছে, খুব দূরে একটা জলের ধারে পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।”
কুঁকড়ো বললেন, “কাপড় কাচা হচ্ছে। আর দেখছি”—সোনালিয়া বললে, “এ কী, কালে কালে ফড়িংগুলো সব ইস্পাতের মতো চকচকে ডানা ঘষছে।” কুঁকড়ো দাড়িয়ে উঠে বললেন, “ওহে, কাস্তেতে যখন শান পড়ছে তখন ধান কাটার দিন এল ব’লে।” তার পর পাহাড়তলির থেকে এদিক থেকে ওদিক থেকে চারি দিক থেকে কত কিসের সাড়া আসতে লাগল। ঘণ্টার ঢং ঢং, হাতুড়ির ঠং ঠং, কুড়লের খটখট, জলের ছপ ছপ, সেকরার টুকটাক, কামারের এক ঘা, হাসি বাঁশি-বাজনা সব শুনতে লাগলেন কুঁকড়ো। কাজ-কর্ম চলেছে, কেউ কি আর ঘুমিয়ে নেই বসে নেই সত্যিই দিন এসেছে, কুঁকড়ো যেন স্বপন দেখার মতো চারিদিকে চেয়ে বললেন, “সোনালি,দিন কি সত্যিই আনলেম,এই-সব কারখানা একি আমার ছিষ্টি। দিন আমি যে আনলুম মনে করেছি আমি যে ভাবছি আকাশে আলো আমিই দিচ্ছি একি সত্যি, না এ-সব পাহাড়তলি পাগলা কুঁকড়োর খ্যাপামি আর খেয়াল? সোনালি, একটি কথা বলব, কিন্তু বলে সে কথা প্রকাশ করবে না, আমার