পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
আলাের ফুলকি

 কুঁকড়াে সােনালিকে বললেন, “কী আশার আলােই জ্বালালে সােনালি, বলো, বলো, আরাে বলো-।”

 সােনালি চুপি চুপি বললে, “আহা মরি, কী সুন্দর তুমি।” “ও কথা থাক্ সােনালি।” “কী চমৎকারই গাইলে তুমি।” কুঁকড়াে বললেন, “গান ভালাে মন্দ যেমনি গাই আমি যে আনতে পেরেছি...।” সােনালি ব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, “ঠিক, ঠিক, আমি তােমায় যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি।” “না সােনালি, আমার কথার উত্তর দাও, বলাে, সত্যি কি।” সােনালি আস্তে বললে, “কী?” কুঁকড়াে বললেন, “বলল, সত্যি কি আমি”, সােনালি এবার তাড়াতাড়ি উত্তর দিলে, “পাহাড়তলির কুঁকড়াে তুমি সত্যি আলাে দিয়ে সূর্যকে ওঠালে আজ, এ আমি স্বচক্ষে দেখেছি।”

 “ভ্যালারে ওস্তাদ” বলেই তাল-চড়াইটা হঠাৎ উপস্থিত। কুঁকড়াে চমকে উঠে দেখলেন চড়াইটা তার মুখের দিকে চেয়ে ভুরু তুলে শিস দিচ্ছে আর নমস্কার করছে। কুঁকড়াে ভাবছেন এ হরবােলাটা সব শুনেছে নাকি। ইতিমধ্যে সােনালিয়া আস্তে আস্তে অন্য দিকে চলেছে দেখে তিনি ডাকলেন, “আমাদের একলা ফেলে কোথায় যাও সােনালি।” চড়াই যতই হাসুক কুঁকড়াের আজ কিছুই গায়ে লাগবে না, সােনালিকে কাছে পেয়ে তার আনন্দ ধরছে না।

 চড়াই বললে, “বাহবা তারিফ। যা দেখলেম শুনলেম।”

 কুঁকড়াে বললেন, “চটকরাজ, তুমি যে মাটি ফুড়ে উপস্থিত হলে দেখছি।”

 চড়াই কুঁকড়ােকে সেই পুরানাে ময়লা খালি ফুলের টবটা দেখিয়ে বললে, “আমি ওইটের ভিতরে বসে একটা কান-কুটুরে পােকা কুট কুট করে খাচ্ছি এমন সময় আঃ, কী যে দেখলেম, কী যে শুনলেম তা কী বলি।”

 কুঁকড়াে বললেন, “তার পর।” চড়াই অমনি বলে উঠলে, “তার পর যদি বলি ওই মাটির টবটা দিব্যি শুনতে পায় তবে কি তুমি অবাক হবে নাকি।”

 কুঁকড়াে বললেন, “গামলা থেকে লুকিয়ে শােনা বিদ্যেও তােমার আছে দেখছি।” চড়াই জবাব দিলে, “শুধু শােনা নয় লুকিয়ে দেখার-লুকি-বিদ্যেও আমি জানি, আমি এমনি অবাক হয়েছিলেম যে কখন যে গামলার তলার ফুটোটা দিয়ে উকি মেরে সব দেখেছি তা আমার