মনে নেই। আহা, কী দেখলেম রে, কী দেখলেম রে, কী সুন্দর কী সুন্দর।”
কুঁকড়ো তাকে এক ধমক দিয়ে বললে, “বটে, লুকিয়ে দেখা! তফাত যাও।” কুঁকড়ো যত ব’লেন, “তফাত তফাত”, চড়াই ততই লেজ নাচিয়ে বেড়ায় আর ঘাড় নেড়ে কুঁকড়োর নকল ক’রে কিচ কিচ ক’রে, “বিদ্যে ফাস লুকি-বিদ্যে হল ফাস ফুস-মস্তর হল ফাস ক্যাবাৎ কাব্যাৎ। কুঁকড়ো তার রকম দেখে হেসে ফেললেন। সোনালিয়া বললে, “চড়াই যখন সত্যিই তোমায় ভক্তি ক’রে তখন ওর সাত খুন মাপ।”
চড়াই বললে, “ভক্তি করব না? এমন আলেয়া বাজিগর বুজরুগ কেউ কি দেখেছে, কী সকালের রঙটাই ফলালে কী গানটাই গাইলে গা যেন তুবড়িবাজি ভুস।”
সোনালি বললে, “এখন তোমরা দুই বন্ধুতে আলাপ-সালাপ ক’রে, আমি চললুম।”
কুঁকড়ো বললে, “কো-ক্-কো-ক্ কোথায়?”
সোনালি বললে, “ওই যে সেই—।”
চড়াই অমনি ব’লে উঠল, “তাই তো, কুঁকড়োর গানের গুণে চিনে-মুরগির ছোটো হাজিরিও জমতে চলল, সাধে বলি কুঁকড়োর গান গাওয়া, চিনে-মুরগির চা খাওয়া,একসঙ্গে আসা যাওয়া।”
কুঁকড়ো সোনালিকে চুপি চুপি শুধলেন, সে একা যাবে, না তিনিও সঙ্গে যাবেন?
সোনালি বললে, না ওরকম মজলিসে তার যাওয়াটা ভালো দেখায় না। কুঁকড়ো সোনালিকে বললেন, “তবে তুমি যাচ্ছ যে।”
সোনালি বললে, “আমি যাচ্ছি আজ তোমার আলোর ঝকমকানিটা কেমন তাই সেই-সব হিংসুক পাখিকে দেখিয়ে আসব”, ব’লে সোনালি একবার গা ঝাড়া দিলে তার সোনার পালকগুলো থেকে যেন আলো ঠিকরে পড়তে লাগল। সোনালি কুঁকড়োকে সেইখানে তার জন্যে থাকতে ব’লে চিনে-মুরগির মজলিসে চলল। চড়াই অমনি তাড়াতাড়ি ব’লে উঠল,“হা, কুঁকড়োর আজ সেখানে না গেলেই ভালো।”
কুঁকড়ো শোধালেন, “কেন।”
“সে তোমার শুনে কাজ নেই” ব’লে চড়াই মিটমিট ক’রে চাইতে লাগল সোনালির দিকে।