পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
আলোর ফুলকি

 “কাকে তারা জোগাড় করেছে” কুঁকড়ো শোধালেন।

 চড়াই বললে, “তোমারই জাতভাই হায়দ্রাবাদি মোরগ, আঃ, সে যে কুস্তিগীর ভীম বললেই চলে, সে তোমার আসা-পথ চেয়ে সেখানে আছে।” কুঁকড়ো শোধালেন, “কোথায়।” “ওই চিনে-মুরগির ওখানে” চড়াই বললে। কুঁকড়ো শোধালেন, “তুমি তাকে দেখতে যাচ্ছ নাকি।” “না বাবা, যে তার পায়ে লোহার কাটা বাধা কী জানি যদি লেগে যায় তবে” ব’লে চড়াইট আড়চোখে কুঁকড়ো কী করেন দেখতে লাগল। কুঁকড়ো চট করে কুলতলার দিকে ঘুরে দাড়ালেন। চড়াই যেন কত ভয় পেয়ে বললে, “যাচ্ছ কোথায়।” “কুলের কাটা যেখানে অনেক সেই কুলতলাতে যাচ্ছি” বলে কুঁকড়ো ঘাড় উচু ক’রে পায়ে পায়ে চললেন। চড়াই যেন কুঁকড়োকে কিছুতেই যেতে দেবে না এমনি ভঙ্গি করে বললে, “নাতোমার যাওয়া সেখানে মোটেই উচিত হবে না, আমি বলছি যেয়ে না।” “যাওয়া চাই” ব’লে কুঁকড়ো গম্ভীর মুখে পুরোনো ফুলের খালি টবট দেখে বললেন, “এই ছোটো গামলাটির মধ্যে তুমি সেঁধোলে কেমন ক’রে” “কেন এমনি ক’রে” বলেই চড়াই লাফিয়ে সেটার মধ্যে গিয়ে বললে, “কেন এই এমনি করে সেধিয়ে এই ফুটো দিয়ে আমি দেখলুম”, “কী দেখলে?” “কেন মাটি”, “আর, এইবার আকাশ দেখে নাও।” বলেই কুঁকড়ো ডানার এক ঝাপটে টবটা উলটে চড়াইকে চাপা দিয়ে সোজা চলে গেলেন। চড়াইট গামলার মধ্যে থেকে বেরোবার জন্মে ঝটাপটি করতে থাকল “গেছি গেছি” ব’লে।


চিনি-দিদি ব্যস্ত হয়ে চারি দিকে ঘুরছেন— খাতির যত্ন ক'রে; আর তাঁর ছেলেটিও মায়ের সঙ্গে ঘুরঘুর করছেন আর মাঝে মাঝে মায়ের দু-একটা ইংরিজি উচ্চারণের আর আদব-কায়দার ভুল হলেই চমকে তাকে কানে কানে ধমকাচ্ছেন। ছেলেটি বিলেতে ভাসাতত্ত্ব পড়তে গিয়েছিলেন কিন্তু সাতার মোটেই না জানায় তিন-তিনবার প্লাকট হয়ে এসেছেন।