পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
৫৭

বাহিরে সোনার আলো,
ভিতরে সোনার রেণু,
বাহিরে বাজল বীণা,
ভিতরে বাজল বেণু,
সকালের আলো আলো গুন-গুনিয়ে।

 ফুলের স্ববাস, সোনার রেণু, পদ্মের মধু রোদ-বাতাস সব যেন একসঙ্গে এসে উপস্থিত হল। মধুকরের দল চারি দিকে স্বরের মধু-বিষ্টি করে দিলে। বাহবা বাহবা পড়ে গেল। চিনি-দিদি কিন্তু গানও বুঝছেন না, স্বরও শুনছেন না। তিনি কেবল কারা কারা তার পার্টিতে এসেছে তারি হিসেব সবাইকে দিচ্ছেন, “বোঝা থেকে শাকের আঁটিটি পর্যন্ত কেউ আর আসতে বাকি নেই, দেখেছ ভাই?” একটা শু্যামা পাখি পেয়ারা গাছে বসে শিস দিলে, অমনি চিনিদিদি বললেন, “ওই শ্যামদাসী এলেন। ওই বুঝি কাছিমুদি? না না কাছিম বুড়ে তো নয়। এ তবে কে। সবাইকে তো চিনি নে ভাই, তেনার সব পুরোনো বন্ধু।” একটা ভীমরুল বোঁ-বোঁ করে চারি দিকে ঘুরে বেড়াতে লাগল, চিনি-দিদি তার পিছনে “ভালো আছ? ভালো আছ?” বলতে বলতে ছুটলেন।

 চড়াই সোনালিকে বললে, “চিনি-দিদি একেবারে খেপে গেছেন।” সোনালি মজা দেখবার জন্তে আড়াল থেকে বেরিয়ে দাড়ালেন। চিনি-দিদি ভীমরুলের সঙ্গে খানিক ছুটে একটা গাছের তলায় দাড়িয়ে একটু কপি পাতা খাচ্ছেন এমন সময় হাওয়াতে টুপ টাপ ক’রে পাতার শিশিরের সঙ্গে একটি শিউলি ফুল ঝরে পড়ল। চিনি-দিদি অমনি বলে উঠলেন, “অ শিউলি, অ শিশির, এতক্ষণে বুঝি আসতে হয়?” এই সময় একটু হাওয়া উঠল আর টুপ করে একটি কুল চিনি-দিদির ঠিক নাকের উপরে পড়ে গেল, চিনি-দিদি চমকে উঠে বললেন, “এই যে বাতাসি-দিদিও এসেছ। তবু ভালো যে মনে পড়েছে।” বলে কতকগুলো গিনিপিগ নিয়ে চিনি-দিদি খাওয়াতে চললেন। “কে যে চিনি-দিদির চেনা নয়, তা জানি নে।” ব’লে চড়াই এদিক-ওদিক ভালো করে দেখে পা টিপে টিপে বেরাল যেখানে আতা গাছের ডালে গুড়ি মেরে বসে এদিক-ওদিক দেখছিল, সেইখানে গিয়ে বললে, “সব ঠিক তো বন্দোবস্ত?” বেরাল