পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
আলোর ফুলকি

গলা বাড়িয়ে বসল। কুঁকড়ো সেটা দেখলেন। হায়দ্রাবাদিটা কেবল তাল ঠুকছিল, তার আর তর সয় না। কুঁকড়ো তাকে বললেন, “ভয় নেই, পালাব না, একটু সবুর করে।” তার পর সবার দিকে চেয়ে বললেন, “কথাটা শুনে তোমাদের যদি খুব হাসি পায় তো খুবই হেসে; তামাশা টিটকিরি দিতে চাও তাও দিয়ে, আমি তাই দেখেই সুখে মরব।” সোনালি চেচিয়ে বললে, “ছিং, ও কী কথা।” জিন্ম বুঝেছিল, কুঁকড়োর মনের কথাটা কী; তাই সে বললে, “বেন বনে মুক্ত ছড়িয়ে কী লাভ হবে বন্ধু।” কিন্তু কুঁকড়ো যখন বলেছেন তখন তিনি আর সে কথা নড়চড় হতে দেবেন না। র্তার মুখ দেখে জিম্মা আর সোনালি দুজনেই চুপ হয়ে গেল। কুঁকড়ো চারি দিকে দেখে বললেন, “নিশাচরদের বন্ধু, অন্ধকারের পাখি সব। তবে শোনে, আর শুনে আমায় পাগল ব’লে খুব হাসে। আজ আমার কাছে তোমাদের কিছুই লুকোনো রইল না, কে আমার আপনার, কেবা পর সব চেনা গেল, ধরা পড়ল। তবে আজ আমিই-বা লুকিয়ে থাকি কেন আপনাকে না জানিয়ে।” বলে কুঁকড়ো আর-একবার চারি দিক দেখে বললেন, “আলোর ফুলকি, আলোর ফুল আকাশে ফোটে কেন তা জানো? আমি গান গাই ব’লে।” প্রথমটা সবাই থ হয়ে গেল, তার পর একেবারে হাসির হুল্লোড় উঠল, “পাগল! পাগল।”

 কুঁকড়ো বলে উঠলেন,“সবাই হাসছতে৷” বলেই হাক দিলেন, “সামাল জোয়ানসামাল।”

 লড়াই শুরু হয়ে গেল। তখনো সবাই হাসছে, কী মজা, উনি গান গেয়ে আকাশে আলো জ্বালান, কী আপদ-।

 কুঁকড়ো বাজখাঁই মোরগের এক প্যাঁচ সামলে বললেন, “হাঁ আমিই সূর্যের রথ রোজকে রোজ টেনে আনি।” তার পরেই কুঁকড়োকে বাজখাই এক ঘা বসালে; তার পর আরএক ঘ, আর-এক ঘা। সবাই চারি দিক থেকে চীৎকার করতে লাগল, “বাহবা বাজখাঁ, চালাও, জোরসে ভাই।” কুঁকড়োর মুখে চোখে ঘা পড়ছে আর সবাই চেঁচাচ্ছে, “খুব হুয়া, বহুত আচ্ছা, জেসাকে তেস, ইয়েঃ মারা।” ওদিকে কুঁকড়োও ব’লে চলেছেন, “আমিই আলে। আনি, সকাল আনি, আলো, আলো, আলো” কুকুর চেঁচাচ্ছে, “হঁ। হাঁ।” সোনালি কাঁদছে চোখ ঢেকে, আর সব পাখি তারা বলে চলেছে হাততালি দিয়ে, “চালাও বাজখাই চোঁচ,