পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
আলোর ফুলকি

“যেখানে নীচের বনে রোদের বেলা বসন্ত বাউরির গানটি মিনতি জানায়, আর উপরের বনে সা-বুলবুল গানের ফোয়ারা খুলে দেয়, সেই বনের মধ্যে কুঁকড়োর ডাক কেউ শুনতে চাইবে, এটা পাগল ছাড়া আর কেউ বিশ্বাস করতে পারে না।”

 কুঁকড়ো কোনো কথা না কয়ে তফাতে সরে দাড়ালেন। সোনালি তবু বললে,“শুনেছ কোনোদিন নিশুত রাতের স্বপনপাখির গান?” “শুনি নি।” ব’লে কুঁকড়ো অশোকের ডালে উঠে বসলেন। সোনালি নিজে নিজেই বলে যেতে লাগল, “স্বপনপাখির গান, সে এমন আশ্চর্য ব্যাপার যে প্রথমবার শুনতে শুনতে”, হঠাৎ সোনালির কী একটা বুদ্ধি মাথায় জোগাল; সে চুপ হয়ে ভাবতে লাগল।

 কুঁকড়ো শুধলেন, “কী বলছিলে?” সোনালি চেঁচিয়ে বললে, “না,কিছু নয়।” আর মনে-মনে হেসে বললে, “এইবার ঠিক হবে। উনি তো জানেন না যে স্বপনপাখির গান শুনতে শুনতে রাত কখন্‌ যে ভোর হয়ে যায়, কেউ বুঝতে পারে না।”

 কুঁকড়ো গাছের উপর থেকে নেমে এসে সোনালিকে বললেন, “কী বলছিলে।”

 “কিছু না।” বলে সোনালি মুখ ফিরিয়ে দাড়াল।

স্বাসের মধ্যে থেকে ব্যাঙ আওয়াজ দিলে, “কর্তা, ঘরে আছেন? কর্তা।” সোনালি “ও মাগো ব্যাঙ।” বলে একলাফে একটা গাছের কোটরে গিয়ে লুকোল। ছ’-ছ’টা কোলাব্যাঙ এসে উপস্থিত। তার মধ্যে সব চেয়ে বড়ো ব্যাঙ এসে হাত নেড়ে কুঁকড়োকে বললে, “বনে চিন্তাশীল যাঁরা, তাঁদের হয়ে আমরা এসেছি ধন্যবাদ জানাতে গানের ওস্তাদ আপনাকে... ওর নাম কী, অনেক গানের আবিষ্কর্তাকে”, আর একজন থপ করে বললে, “জলের মতো সহজ গানের”, অমনি তৃতীয় ব্যাঙ থপ্‌ থপ্‌ করে বললে, “যত-সব ছোটো গানের”, অমনি অন্যে বললে, “মজার গানের।”