পূর্বদিকে।” কুঁকড়ো “না” বলে যেমন সেদিকে চাইলেন, অমনি সোনায় আকাশ ভরে উঠল। “এ কী। এ কী”—বলে কুঁকড়ো চোখ ঢাকলেন। সোনালি বললে, “পুর্বদিক কারু হুকুম মানে না, দেখলে তো?”
কুঁকড়ো ঘাড় হেঁট করে বললেন, “সত্যিই বলেছ। মন সেও হুকুম মানে,কিন্তু পুবদিক, সে কারু নয়। আজ আমি বুঝেছি কেউ কারু নয়।”
এই সময় জিম্মী ছুটতে ছুটতে এসে বললে, “গোলাবাড়িতে সবাই চাচ্ছে তোমাকে। পাহাড়তলি আর অন্ধকার করে রেখে না।” কুঁকড়ো জিন্মাকে বললেন, “হায়, এখনো তারা আমাকে আলোর জন্যে চাচ্ছে? আলো দেব আমি, এ কথা এখনো তারা বিশ্বাস করছে।” জিম্ম অবাক হয়ে রইল। কুঁকড়ো এ কী বলছেন। তার চোখে জল এল। সোনালি এবার সব অভিমান ছেড়েছুটে কুঁকড়োর কাছে গিয়ে বললে,“আকাশ আর আলোচুটোই কি আমার এই বুকের ভালোবাসার চেয়ে বড়ো? দেখে ওরা তো তোমায় চায় না, আর আমার বুক তোমায় চাচ্ছে।”
কুঁকড়ো ভাঙা গলায় বললেন, “হা, ঠিক।” সোনালি বলে চলল, “আর অন্ধকার, সে কি আর অন্ধকার থাকে, যদি ছটি-প্রাণের ভালোবাসার আলো সেখানে—” কুঁকড়ো তাড়াতাড়ি “হাঁ” বলে সোনালির কাছ থেকে সরে দাড়িয়ে সপ্তম-সুরে চড়িয়ে ডাক দিলেন, “আলোর ফুল।”
সোনালি অবাক হয়ে বললে, “গাইলে যে।”
কুঁকড়ো বললেন, “এবার আমি নিজেকে নিজে ধমকে নিলেম। বারবার তিনবার আমি যা ভালোবাসি, তা করতে ভুলেছি।” সোনালি শুধলে, “কী ভালোবাস শুনি।”
কুঁকড়ো গম্ভীর হয়ে বললেন, “কাজ,আমার যা কাজ তাই।” বলে কুঁকড়ো জিন্মাকে বললেন, “চলো, এগোও” “গিয়ে করবে কী।” সোনালি শুধলে। “আমার কাজ সোনালি।” “কিন্তু রাত্রি তো আর নেই।”
কুঁকড়ো বললেন, “আছে, সব ঘুমন্ত চোখের পাতায়।”
সোনালি হেসে বললে, “আজ থেকে ঘুম ভাঙানোই বুঝি ব্রত হল তোমার। কিন্তু যাই বল, সকাল তো হল তোমাকে ছেড়ে, তেমনি ঘুমও ভাঙবে তুমি না গেলেও।”