পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

হইয়াছিলাম, তিনি আমাকে যেখানে লইয়া গিয়াছেন, আমি সেইখানেই গিয়াছি। প্রভাতে ত্রিচূড় দিয়া যাত্রা করিবার সময়, তিনি কৃপা করিয়া সমস্তই পূর্ব্ব হইতে বন্দোবস্ত করিয়া রাখিয়াছিলেন। আমার পথপ্রদর্শক, আহারসামগ্রী—সমস্তই প্রস্তুত ছিল। এমন কি, যে তিনঘণ্টার পথ অতিক্রম করিয়া, গ্রাম-জঙ্গল বনের মধ্য দিয়া, বয়েল-গাড়িতে আমায় “সোরানুরে” যাইতে হইবে—সেই গাড়িরও বদোবস্ত তিনি করিয়া রাখিয়াছিলেন।

 বিদেশী পর্যটকেরা সেখানে কখনই যায় না,—সোরানুর ছাড়াইলেই আহা! আমি সেই চিত্তবিমোহন ভারতখণ্ডের বাহিরে চলিয়া যাইব; মাদ্রাজ যাইবার জন্য, আবার সেই সাধারণ রেলপথ ধরিয়া ডাকগাড়ির ট্রেণে আমার উঠিতে হইবে।


তাঞ্জোরের অদ্ভুত শৈল

 তাঞ্জোর প্রদেশের অনন্তপ্রসারিত সমভূমির উর্ধে, নারিকেলাদিতরুসমাচ্ছন্ন বনভূমির উদ্ধে, একটি শৈলস্তপ খাড়া হইয়া উঠিয়াছে—নিঃসঙ্গ, বিরাটাকৃতি; উহা যুগযুগান্তর হইতে এই প্রদেশটিকে নিরীক্ষণ করিতেছে; কালক্রমে কত বন গজাইয়া উঠিল, কত নগর সমুখিত হইল, কত দেবালয় নির্ম্মিত হইল-~-সমস্তই দেখিয়াছে। ভূতত্বের হিসাবে ইহা একটি অদ্ভুত ব্যাপার;—আদিযুগের প্রলয়-প্লাবন-সত যেন একটি আজগুবি খেয়ালকল্পনা; দেখিতে মুকুটের চূড়ার মত; অথবা যেন দৈত্যদিগের জাহাজের অগ্রভাগ, উদ্ভিজ্জের হরিৎ-সাগরে অর্ধ-মজ্জিত। প্রায় পাঁচ শত হাত উচ্চ। চারিদিককার বিস্তৃত সমতল ভূমির মধ্যে উহা কিরূপে সমুদ্ভূত হইল, আশপাশের কোন লক্ষণ দেখিয়া তাহা বুঝা যায় না। উহার গাত্র এরূপ মসৃণ যে, এই উদ্ভিজ্জ-প্রবল দেশেও, উহাতে কোনও গাছের চারা