পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তাঞ্জোরের অদ্ভুত শৈল।
১২৯

 ঐ দেখ একজন নবযুবতী-গঠনটি বেশ ছিপছিপেজরির-কাজ-করা কালো রঙ্গের মলমল-শাড়ী পরিয়াছে; দেখিতে এমন সুশ্রী যে, না ইচ্ছা করিয়াও, তাহার সম্মুখে থমকিয়া দাঁড়াইতে হয়। যতবার সে মাটির দিকে নীচু হইতেছে—যতবার সে উঠিতেছে, ততবারই তাহার বাহু ও চরণদ্বয় হইতে নূপুর-বলয়ের মধুর ঝঙ্কার শ্রুত হইতেছে; যে সকল মনঃকল্পিত নক্সা সে ভূমির উপর আঁকিতেছে, তাহাতে তাহার অপূর্ব্ব কল্পনা-লীলার পরিচয় পাওয়া যায়। * * * আজিকার রাত্রে যে ব্যক্তি আমার প্রদর্শক, তাহার নাম “বেল্লনা"—উচ্চবর্ণের লোক; স্ত্রীলোকটির সহিত সে সাহস করিয়া কথা আরম্ভ করিয়া দিল, এবং আমার হইয়া সে জিজ্ঞাসা করিল—তাহার সাদা গুড়া আমাকে সে কিছু দিতে পারে কি না, যদি দেয়, তাহা হইলে আমিও তাহার গৃহের সম্মুখস্থ ভূমিটি চিত্রিত করিয়া দিই। সে একটু মুচকি হাসিয়া সঙ্কোচের সহিত তাহার চূর্ণাধারটি আমার নিকট পাঠাইয়া দিল, সে স্বয়ং আমার হস্ত স্পর্শ করিতে কুষ্ঠিত হইল। আমার হস্ত হইতে কিরূপ নক্সা বাহির হয়, দেখিবার জন্য কুতূহলী হইয়া, এই সকল উপচ্ছায়াবৎ শুভ্রবসনধারী লোকেরা আমার চারি দিকে ঘিরিয়া দাড়াইল।

 বিষ্ণুর সাঙ্কেতিক চিটি আমি অতি পরিপাটীরূপে লাল মাটির উপর চিত্রিত করিলাম। তখন, বিস্ময় ও মমতা-সূচক অস্ফুট গুঞ্জনধ্বনি চারি দিক হইতে সমুখিত হইল। তখন সেই রূপসী ভারত-ললনা স্বয়ং সেই চূর্ণাধারটি আমার হস্ত হইতে ফিরিয়া লইল; এমন কি, তাহার কল্পত নক্সা-রচনার কাজে আমাকে সহকারী করিতেও সম্মত হইল:চারিধারে গোলাপ ফুলের ও তারার না কাটিয়া তাহাদের প্রত্যেকের মধ্যবিন্দুতে এক একটি Ibiscus ফুল বসাইয়া দিতে হইবে।—ইহাই তাহার নার কল্পনা।

 যাহা হউক, আমাকে সে যে স্পর্শ করিল তাহার পক্ষে ইহা একটা খুব